অ্যাটলাস লায়ন্সদের পুঁজি করে মরক্কোর ‘বিশাল পরিকল্পনা’

গত বছর কাতার বিশ্বকাপে অ্যাটলাস লায়ন্সদের নজরকাড়া পারফরম্যান্সকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে মরক্কো। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে ৩ কোটির বেশি পর্যটক আসবে বলে আশা করছে দেশটির ন্যাশনাল এয়ারপোর্ট অফিস।

কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবলে অ্যাটলাস লায়ন্স নামে পরিচিত মরক্কোর জাতীয় ফুটবল দল অসাধারণ খেলেছে

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই বছর বিরতির পর দেশটির পর্যটন শিল্পে আবার প্রাণ ফিরে এসেছে। কারণ গত বছরের সেপ্টেম্বরে অবশিষ্ট কোভিড ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশটি। ফলে ২০২২ সালে মরক্কো পর্যটন খাতে ৩.৯ বিলিয়ন মরক্কান দিরহাম বা ৩৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। ২০২১ সালের তুলনায় ৮৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সর্বশেষ সংসদ অধিবেশন চলাকালীন জাতীয় বিমানবন্দর কার্যালয়ের মহাপরিচালক হাবিবা লাকালেচ জানিয়েছেন, আগামী ৭ বছরে ৩৭ মিলিয়ন বা ৩.৭ কোটি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য বিশ্বকাপে জাতীয় ফুটবল দলের পারফরম্যান্সকে ব্যবহার করা হবে।

২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবলে অ্যাটলাস লায়ন্স নামে পরিচিত মরক্কোর জাতীয় ফুটবল দল অসাধারণ খেলেছে। মরক্কো প্রথম আফ্রিকান এবং আরব দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে। খেলার মাঠের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি মরক্কোর ফুটবলারদের কর্মকাণ্ডও বিশ্বজুড়ে দর্শকদের হৃদয় কেড়ে নিয়েছে। বিশেষ করে আশরাফ হাকিমি, সোফিয়ান বাউফল জয়ের পর যেভাবে নিজেদের মাকে নিয়ে উদযাপন করেছেন, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। ফলে বিশ্বজুড়ে ফুটবল ভক্তদের মধ্যে ‘মরক্কো ম্যানিয়া’ তৈরি হয়েছে।

বিশেষ করে আশরাফ হাকিমি, সোফিয়ান বাউফল জয়ের পর যেভাবে নিজেদের মাকে নিয়ে উদযাপন করেছেন, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল

বিশ্বকাপের পরের দুই সপ্তাহে মরক্কোতে আগত পর্যটকের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। কাতার বিশ্বকাপের দুই মাস পর মরক্কোর রাজধানী রাবাতে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, সে সময় ৫০ হাজার ফুটবল ভক্তকে স্বাগত জানিয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশটি। 

মরোক্কার ন্যাশনাল ট্যুরিজম অফিস দ্বারা পরিচালিত একটি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ‘ভিজিট মরক্কো’। এই ওয়েবসাইটে মরক্কোর ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন নিদর্শনের পাশাপাশি  জাতীয় ফুটবল দলের জন্যও স্পেশাল একটি পেজ রাখা হয়েছে। সেটির শিরোনাম দেওয়া হয়েছে, ‘মরক্কো, ফুটবলের দেশ’।

এদিকে স্পেন এবং পর্তুগালকে সঙ্গে নিয়ে ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক হতে চায় মরক্কো। যদি এই তিনটি দেশ বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের দায়িত্ব পায় তাহলে ২০ লাখের বেশি দর্শক এই দেশগুলোতে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মরক্কোর অর্থনীতিতে দেশটির পর্যটন শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে। এটি ২০১৯ সালের মধ্যে ২৫ লাখের বেশি কাজের সুযোগ তৈরি করেছে। এছাড়া দেশটির জিডিপির ৪ শতাংশ পর্যটন খাত থেকে আসে। 

সূত্র: দ্য নিউ আরব