এ যেন আরেক আবু হুরায়রা!

পবিত্র রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত তারাবির নামাজ পড়াচ্ছিলেন আলজেরিয়ার এক ইমাম। পেছনের কাতারগুলোতে ছিলেন মুসল্লিরা। হঠাৎ করেই অভাবিত এক অতিথির আগমন ঘটে সেখানে, যিনি লাফ দিয়ে উঠে বসেন ইমামের কাঁধে। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তিনি নেমে যান। খবর আল আরাবিয়্যাহ ও স্ট্রেইট টাইমস।

বিড়ালটিকে উঠতে সাহায্য করছেন ইমাম

অনাকাঙ্ক্ষিত এই অতিথি ছিল একটি বিড়াল। তবে তার আগমনে একটুও বিরক্ত হননি ইমাম। বরং কাঁধে চড়ে বসার জন্য নামাজ চলাবস্থাতেই বিড়ালটিকে সাহায্য করেন তিনি। মনমুগ্ধকর এ ভিডিওটি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকে মন্তব্য করেন, এ তো এ যুগের আবু হুরায়রা!

ঘটনাটি ঘটেছে আলজেরিয়ার বোর্দজ ব্যু অ্যারেরিজ প্রদেশের আবু বকর মসজিদে। তারাবির ইমামতি করছিলেন শায়খ ওয়ালিদ মেহসাস। গত বুধবার নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে তিনি ভিডিওটি আপলোড করেন। ভিডিও ক্যাপশন লিখেছিলেন, প্রাণীরাও কুরআনের বাণীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

ইমামের কাঁধে বিড়াল

দুই মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ইমাম কোরআন তেলাওয়াত চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় একটি বিড়াল কিছুক্ষণ আশপাশে ঘুরে এক সময় লাফ দিয়ে ইমামের কাঁধে চড়ে বসার চেষ্টা করে। তার এ কাজে শায়খ ওয়ালিদ নামাজ বন্ধ করে দেননি। এমনকি সামান্যতম বিরক্তও হননি। বরং বিড়ালটি যখন উঠতে ব্যর্থ হচ্ছিল, তখন তিনি নামাজের ব্যত্যয় না ঘটিয়েই বিড়ালটিকে সাহায্য করে যাচ্ছিলেন। মহানবী (স.) বিড়াল ভালোবাসতেন। আলজেরিয়ার এই ইমাম যেন সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বিড়ালের প্রতি স্নেহশীল ছিলেন।

এ সময় তিনি বিড়ালটির মাথায় হাতও বুলিয়ে দেন। একসময় বিড়ালটি ইমামের কাঁধে চড়ে বসতে সক্ষম হয়। কাঁধে কিছুক্ষণ বসে থাকে, ইমামের গালের সাথে নিজের গাল লাগায়। অবশ্য রুকুতে যাওয়ার আগে বিড়ালটি তার কাঁধ থেকে নেমে যায়। এরপর বেশি দূরে না গিয়ে বিড়ালটি আশেপাশেই ঘুরতে থাকে।

ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ইমাদ নামের একজন মন্তব্য করেন, ইমামের মধুর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত শোনার জন্যই মনে হয় বিড়ালটি ঘুরঘুর করছিল। আরেকজন বলেন, বিড়ালটির প্রতি ইমামের ব্যবহার সত্যিই মধুর। এমনকি বিড়ালকে আদরের ভঙ্গিমাও বেশ চমৎকার। এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, সুবহানাল্লাহ! দুজনই বেশ আবেগী ও দয়ালু। আরেকজন লেখেন, হৃদয়ে ভরিয়ে দেওয়ার মতো একটি ভিডিও। সুলেফ হামাদিন নামক এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, ভিডিওটি হাজারবার দেখেছি। প্রতিবারই আল্লাহর প্রশংসা করেছি।

উল্লেখ্য, সবচেয়ে বেশি হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি আবদুর রহমান ইবনে সাখর নিজের জামার আস্তিনে একটি বিড়াল নিয়ে ঘুরতেন। সেই জন্যে রাসূল (স.) তাকে আবু হুরায়রা বা বিড়ালের পিতা নামে ডাকতেন। সেই ডাকটি এতই গ্রহণযোগ্যতা পায় যে, পরে বিশ্ববাসীর কাছে তিনি আবু হুরায়রা নামে পরিচিতি পেয়েছেন। অধিকাংশ মানুষই তার আসল নাম ভুলে গেছে।