ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িত কোনো পক্ষকে অস্ত্র দেবে না চীন

ইউক্রেনে যুদ্ধরত পক্ষগুলোর কাছে কোনো ধরনের অস্ত্র বিক্রি করবে না চীন। গতকাল শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, বেসামরিক ও সামরিক উভয় কাজে ব্যবহার করা যায় এমন পণ্যের রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে তার দেশ। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং

গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে রাশিয়াকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বেইজিং। পশ্চিমা দেশগুলো দাবি করছে, মস্কোকে প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টিও বিবেচনা করছে চীন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের নিরপেক্ষ দাবি করে অস্ত্রের বিষয়ে এই ঘোষণা দিলেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

চীন সফররত জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে কিন গ্যাং বলেন, ইউক্রেনে সংঘাতে সব পক্ষের উচিত শান্ত থাকা। এ ব্যাপারে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের আলোচনায় সহযোগিতা করতে চায় চীন। এ সময় রাশিয়াকে অস্ত্র দেওয়ার ব্যাপারে তিনি মন্তব্য করেন, সামরিক পণ্য রপ্তানির বিষয়ে চীন একটি বিচক্ষণ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে সংঘাতে লিপ্ত কোনো পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ করবে না চীন। এমনকি যেসব পণ্য সামরিক ও বেসামরিক উভয় কাজেই ব্যবহার করা যায় সেগুলো রপ্তানির ব্যাপারেও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে বেইজিং।

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ

সংবাদ সম্মেলনে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেন, চলমান সংঘাত অবসানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একজন স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীনের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। এ ব্যাপারে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বেইজিং শান্তির জন্য কাজ করতে রাজি। তবে তারা আশা করে সংঘাতে জড়িত সব পক্ষ বাস্তবতাকে মেনে নেবে এবং আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের অবসানে গঠনমূলক উদ্যোগ নেবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তথ্য রয়েছে, চীন রাশিয়াকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করার কথা বিবেচনা করছে। সে সময় তিনি সতর্ক করে বলেন, ক্রেমলিনের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় এই ধরনের জড়িত হওয়া একটি গুরুতর সমস্যার জন্ম দেবে। অন্যান্য ইউরোপীয় নেতারাও বলেছেন, চলমান সংঘাতে রাশিয়াকে সমর্থন দেওয়া হবে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতিগুলোর ‘একটি স্পষ্ট লঙ্ঘন’।

উল্লেখ্য, রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেনকে দৃঢ় সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে জার্মানি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সংঘাতের উসকানিদাতা হিসেবে দায়ী করে আসছে বেইজিং। একই সঙ্গে ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য রাশিয়ার সমালোচনা করা থেকে বিরত থেকেছে তারা। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞারও সমালোচনা করেছে দেশটি।