রুশ দূতাবাসের স্কুল জব্দ করল পোল্যান্ড

পোল্যান্ড সরকার সে দেশের রাজধানী ওয়ারশতে রুশ দূতাবাসের পরিচালিত একটি স্কুল জব্দ করেছে। ওয়ারশ সময় আজ সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে রুশ কূটনীতিক ও কর্মীদের স্কুলটি থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। স্কুল ভবনটি রাশিয়া বেআইনিভাবে দখল করেছিল বলে পোল্যান্ড জানিয়েছে। রাশিয়া বলেছে, পোল্যান্ডকে এ সিদ্ধান্তের কঠোর জবাব দেওয়া হবে।

ওয়ারশতে রুশ দূতাবাসের পরিচালিত স্কুল জব্দ করেছে পোল্যান্ড সরকার

স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে ওয়ারশ সিটি কাউন্সিলের কয়েকজন কর্মকর্তা পুলিশসহ রুশ দূতাবাসের স্কুলের সামনে উপস্থিত হন। তারা রুশ দূতাবাসের কর্মীদের স্কুলের গেট খুলতে বললে দূতাবাস কর্মীরা অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে পোলিশ কর্মকর্তারা তালা ভেঙে গেট খুলে স্কুল প্রাঙ্গনে প্রবেশ করেন। স্কুল ভবন থেকে ঘুরে এসে তারা গেটটি তালা মেরে সিলগালা করেন।

এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে ওয়ারশতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই আন্দ্রিভ ও অন্যান্য কর্মকর্তারা স্কুলের সামনে আসেন। গেট বন্ধ থাকায় তারা ভেতরে ঢুকতে পারেননি। স্কুলের সীমানা প্রাচীরের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, স্কুল জব্দের ঘটনায় রাশিয়ার পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিবাদ জানানো হবে।

দুপুরে পোল্যান্ড কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে রুশ দূতাবাসকে স্কুল খালি করার জন্য সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। বিকেলের দিকে রুশ শিক্ষক ও স্কুলের কর্মীরা কম্পাউন্ডের ভেতর প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পর তাদেরকে একটি ট্রাকে মালামাল বোঝাই করতে দেখা যায়। এ সময় সেখানে রাশিয়ার দেশাত্মবোধক সঙ্গীত ‘ফেয়ারওয়েল টু দ্য স্লাভ’ বাজানো হচ্ছিল।

পোল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লুকাস ইয়াসিনা বলেছেন, রুশ দূতাবাসের পরিচালিত মাধ্যমিক স্কুলটির ভবন ও অন্যান্য সম্পদ পোল্যান্ড সরকার নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে। স্কুলের ভবন ও জমি রাশিয়া বেআইনিভাবে দখল করে রেখেছিল বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। ওই সম্পত্তির মালিক ওয়ারশ সিটি হল। আদালতের আদেশক্রমে আমরা সেটা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি।

রুশ দূতাবাসের পরিচালিত মাধ্যমিক স্কুলটি দূতাবাস ভবনের কাছেই অবস্থিত। রাশিয়া ও অন্যান্য দেশের কূটনীতিকদের সন্তানরা ওই স্কুলে পড়াশোনা করেন। স্কুল জব্দের বিষয়টিকে ‘বৈরী ও বেআইনি পদক্ষেপ’ অভিহিত করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এটা কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা চুক্তির পরিপন্থী। আমরা বিষয়টিকে পোল্যান্ডে রাশিয়ার সম্পত্তি জবরদখল হিসেবেই দেখছি।

এ বিষয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওয়ারশ কর্তৃক এই জবরদস্তিমূলক পদক্ষেপ সভ্য আন্তঃরাষ্ট্রীয় মিথষ্ক্রিয়ার মধ্যে পড়ে না। এ ঘটনাটি কঠোর প্রতিক্রিয়ার বাইরে থাকবে না। পোলিশ কর্তৃপক্ষ ও রাশিয়ায় পোলিশ স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে এর জের টানতে হবে।

রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রভাবশালী জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ এক টুইটে লেখেছেন, পোল্যান্ডের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার আমি কোনো যুক্তি দেখি না। যতক্ষণ পর্যন্ত রুশবিদ্বেষীরা ছাড়া অন্য কেউ ক্ষমতায় থাকছে না এবং ইউক্রেনও পোলিশ ভাড়াটে দস্যুতে ভরে রয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের জন্য এই দেশটির অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়।