অমীমাংসিত আগুনে লড়াই

ভিনিচিয়াস জুনিয়র নাকি কেভিন ডি ব্রুইনে? মঙ্গলবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ডি-বক্সের বাইরে থেকে যে গোল দুটি তারা করলেন সেখান থেকে একটি বেছে নেওয়া কঠিন। তাদের গোলের মতো দলীয় লড়াইটাও হলো অমীংসিত। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদ-ম্যানচেস্টার সিটি মহারণটা ১-১ গোলে ড্র হলো।

রিয়াল মাদ্রিদ-ম্যানচেস্টার সিটি মহারণটা ১-১ গোলে ড্র হলো

এই ড্রয়ে কিছুটা হলেও হতাশ রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষের মাঠে হার ঠেকাতে পেরেই খুশি ম্যাচেস্টার সিটি। কারণ দ্বিতীয় লেগটা তারা খেলবে নিজেদের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে। আগামী বুধবার ফাইনালে ওঠার দ্বিতীয় লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে রিয়াল-সিটি। ওই ম্যাচে মানসিকভাবে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে সিটি; পিছিয়ে থাকবে রিয়াল।

বার্নাব্যুতে ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়াল মাদ্রিদকে চেপে ধরে সিটি। মুহুর্মুহু আক্রমণে স্বাগতিক ডিফেন্ডারদের নাভিশ্বাস তুলে ফেলে পেপ গার্দিওলার দল। এ সময়ে রিয়াল গোলরক্ষক থিবাউট কোর্তোয়াকে ভালোই পরীক্ষা দিতে হয়েছে। প্রথমার্ধে স্বাগতিকদের কয়েকবার গোল হজমের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন বেলজিয়ান শেষ প্রহরী।

ম্যাচে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছে সিটি গোলরক্ষক এডারসনকে। ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক রিয়ালের কয়েকটি প্রায় নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে দিয়েছেন। ম্যাচে দুজনের সেরা কে সেটিও বেছে নেওয়া কঠিন। কারণ দুই দল যে গোল দুটি করেছে সেটিতে আসলে গোলরক্ষকের চেয়েও দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।

প্রথম গোলটা ভিনিচিয়াসের। খেলার ধারার বিপরীতে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। নিজেদের রক্ষণাঞ্চল থেকে এদোয়াদো কামাভিঙ্গা পাল্টা আক্রমণে বল নিয়ে যেভাবে সিটির দুর্গে ঢুকে পড়লেন সেটি ছিল এক কথায় অসাধারণ। তার দুর্দান্ত পাস থেকে অসাধারণ গোল করেন ব্রাজিলিয়ান ফরওয়ার্ড। ম্যাচের বয়স তখন ৩৬ মিনিট।

বিরতির আগে গোলমুখে চারটি শট নিয়েও গোল পায়নি সিটি। রিয়াল কাজে লাগিয়েছে একটি সুযোগই। লিড নেওয়ার পর খেলার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেয় স্বাগতিকরা। বিরতির পরও সিটির ওপর চাপ অব্যাহত রাখেন কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। কিন্তু এডারসনকে দ্বিতীয়বার ফাঁকি দিতে পারেননি তারা।

বরং প্রতি আক্রমণে সমতায় ফেরে সিটি। ডি ব্রুইনের রকেট গতির শটে স্কোর লাইন দাঁড়ায় ১-১। সিটি সমতায় ফেরার কয়েক মিনিটের আগে দুই দুটি পেনাল্টির দাবি জানায় রিয়াল। কিন্তু তাদের হ্যান্ডবলের দাবি আমেলিই নেননি রেফারি। ম্যাচ শেষে এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন রিয়াল কোচ; তার দাবি অন্তত একটি পেনাল্টি পাপ্য ছিল দল।

প্রথমার্ধে আক্রমণে আধিপত্য থাকার পরও গোল হজম করেছে সিটি। দ্বিতীয়ার্ধে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে রিয়ালের। দুই দলের লড়াইটাও হলো সেয়ানে সেয়ানে। যেখানে কেউ যেতেনি। দুই দলের শারীরী ফুটবলও ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে যে ফুটবলারকে নিয়ে এতো আলোচনা ছিল সেই আর্লিং হাল্যান্ড এদিন থাকলেন নিজের ছায়া হয়ে।

তার একটি শট ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক। প্রতিহত করেন হাল্যান্ডের হেড। তার আরেকটা শট ঠেকান অ্যান্তনিও রুদিগার। সবমিলিয়ে রাতটা ভালো কাটেনি হাল্যান্ডের। দ্বিতীয় লেগে নিশ্চয়ই গোলে ফিরতে চাইবেন নরওয়েজান স্ট্রাইকার!