সেনা মুখপাত্রকে ইমরান: রাজনীতিতে নেমে পড়ছেন না কেন

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের রাজনীতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বলেছেন, তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যেসব সমালোচনা করা হয়েছে, তার অধিকার তাদের নেই। ক্ষুব্ধ ইমরান বলেন, এর চেয়ে বরং তারা নিজেরাই একটি রাজনৈতিক দল খুলে মাঠে নেমে পড়তে পারে। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

ইমরান খান ও আইসএসপিআর ডিজি

সম্প্রতি হঠাৎ করেই গ্রেপ্তার এবং অভাবনীয়ভাবে মুক্তি লাভের পর সেনাবাহিনীর ওপর নিজের ক্ষোভ ঝাড়েন তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। তিনি বলেন, কে আপনাদের অধিকার দিয়েছে, এভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন সব জঘন্য অভিযোগ করার? আপনারা বলছেন, আমি সেনাবাহিনীর যা ক্ষতি করেছি, তা আর কেউ করেনি। আপনারা আমাকে নিঃশেষ করে দেবেন, এমন বক্তব্যের জন্য আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আইএসপিআরের ডিজি আহমেদ শরিফ চৌধুরীর তীব্র সমালোচনা করে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, শুনুন মিস্টার ডিজি! আমি যখন দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছিলাম, দেশের হয়ে সুনাম অর্জন করছিলাম, সে সময় আপনার জন্মও হয়নি। এই ডিজি ইমরান খানকে ‘ভণ্ড রাজনীতিবিদ’ বলে অভিহিত করায় তিনি তার বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করেন।

গত সপ্তাহে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়

এ সময় তিনি বর্তমান জোট সরকারেরও তীব্র সমালোচনা করেন। পাকিস্তানের গণতন্ত্র ‘সর্বকালের নিম্ন’ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্র এখন সুতোয় ঝুলছে। বর্তমান সরকার ‘নির্বাচনের ভয়ে ভীত’। কারণ নির্বাচন হলে পিটিআই দ্বারা তাদের ‘নিশ্চিহ্ন’ হওয়ার আশঙ্কা ছিল।

সরকার ও সেনাবাহিনীর ঢালাও সমালোচনা করলেও তিনি বিচারব্যবস্থার প্রশংসা করে বলেন, দেশের গণতন্ত্র খুবই নাজুক অবস্থায় পৌঁছে গেছে। শুধু বিচারব্যবস্থার জন্যই টিকে রয়েছে গণতন্ত্র। এখন সময় এসেছে গোটা দেশের বিচারব্যবস্থার পাশে দাঁড়ানোর।

গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার সমর্থকরা সরকারের সেই প্রচেষ্টা বানচাল করে দেয়। অবশেষে গত মঙ্গলবার (৯ মে) আদালতে আগাম জামিন নিতে আসলে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (ন্যাব) তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আট দিনের পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়। তবে একদিন পরই পরিস্থিতি পাল্টে যায় দেশের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপে। তিনি ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে তাকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেন। শনিবার তিনি মুক্তি পান। এরপরই তিনি সংবাদ সম্মেলনে দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

গত সপ্তাহে ইমরান খান দাবি করেছিলেন, ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর তাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল। এই হত্যাচেষ্টার পেছনে ছিলেন একজন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আইএসপিআর মুখপাত্র বলেছিলেন, এই বানোয়াট ও দূষিত অভিযোগগুলো অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।