রিয়ালকে গুঁড়িয়ে ফাইনালে সিটি

দুই গোলে পিছিয়ে পড়া রিয়াল মাদ্রিদ গত মৌসুমে অলৌকিক এক প্রত্যাবর্তন করে। বুধবার রাতের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগেও পিছিয়ে পড়ে তারা। আবারও মিরাকলের আশায় ছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। কিন্তু রূপকথা প্রতিদিন হয় না। কার্লো আনচেলত্তির দল সেটিই এবার বুঝল। জয় তো দূরের কথা ম্যানচেস্টার সিটির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ।

জয় তো দূরের কথা ম্যানচেস্টার সিটির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ

ইতিহাদ স্টেডিয়ামে গিয়ে বরং ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হলো টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সেরা দলটি। সিটির মাঠে এ নিয়ে পরপর চারটি ম্যাচ হারল রিয়াল। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ গোলে জিতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বপ্নের ফাইনালের টিকিট কাটল সিটি। প্রতিযোগিতায় এটা হতে যাচ্ছে সিটির দ্বিতীয় ফাইনাল। এর আগে ২০২১ সালে ফাইনালে স্বদেশী ক্লাব চেলসির কাছে হেরেছিল তারা।

সিটির প্রধান কোচ পেপ গার্দিওলার জন্য অবশ্য এটা হতে যাচ্ছে চতুর্থ ফাইনাল। আগামী ১০ জুন ইস্তাম্বুলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে সিটির প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান। যারা কিনা ‘অল ইতালিয়ান’ লড়াইয়ে এসি মিলানকে হারিয়েছে। দুই লেগ মিলিয়ে মিলান ডার্বি জিতে ১৩ বছর পর ফাইনালে উঠেছে তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা।

কিছুদিন আগে ওয়েন রুনি বলেছিলেন, ‘সিটি কেবল রিয়ালকে হারাবেই না, উড়িয়ে দেবে।’ প্রথম লেগে না হলেও দ্বিতীয় লেগে রিয়ালকে স্রেফ খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়েছে সিটি। যেটির আভাস শুরু থেকেই দিয়েছে তারা। ঘরের মাঠে শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে দেখা যায় সিটিকে। এই অর্ধে রিয়াল বড্ড ছন্নছাড়া ছিল। প্রথমার্ধের পুরোটা সময় দাপট দেখায় সিটি।

২৩ মিনিটে বার্নার্ডো সিলভার গোলে লিড নেয় সিটি। ৩৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পর্তুগিজ তারকা। ম্যাচটা শেষ হয়ে গেছে ওখানেই। তবে প্রতিপক্ষ যেহেতু রিয়াল মাদ্রিদ তাই শেষ বাঁশির আগ পর্যন্ত নিশ্চয়তা দেওয়া কঠিন। গত মৌসুমেও তো শেষ দিকে দেড় মিনিটে দুই গোল করে সিটির বিপক্ষে স্বপ্নের একটা প্রত্যাবর্তন করেছিল আনচেলত্তির দল।

কিন্তু রূপকথা প্রতিদিন হয় না। এ জন্য পারফরম্যান্স এবং ভাগ্য দুটোই দরকার ছিল তাদের। কিন্তু এদিন পুরো ম্যাচে রিয়ালের পারফরম্যান্স ছিল বাজে। আর দুর্ভাগ্য এসেছিল ৩৫ মিনিটে। টনি ক্রুসের দূরপাল্লার শট সিটি গোলরক্ষক এডারসনের হাতের ছোঁয়ার পর পোস্টে লেগে ফিরে আসে। গোলপোস্ট হতাশ করেছে আর্লিং হাল্যান্ডকেও।

অথচ দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে লড়াইয়ে ফেরার আভাস দিয়েছিল রিয়াল। গোছানো ফুটবল খেলতে থাকে তারা। কিন্তু শেষপর্যন্ত ফেরার আশা নিরাশায় রূপ নেয়। দ্রুতই ম্যাচের লাগাম তুলে নেয় সিটি।

রিয়াল ম্যাচে গোল পায়নি আর। বরং ৭৬ মিনিটে হজম করে আরও একটি। সিটির ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে ফেলেন রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার এডার মিলিতাও। যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে স্প্যানিশ জায়ান্টদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন একটু আগেই বেঞ্চ ছেড়ে আসা আর্জেন্টাইন ফরওয়ার্ড হুলিয়ান আলভারেজ।