ইমরান: সেনাপ্রধানের সঙ্গে আমার কোনো ‘সমস্যা নেই’

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন যে দেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে তার কোনো ‘সমস্যা নেই’। তবে তিনি অভিযোগ করেন, সেনাবাহিনী প্রধান (সিওএএস) জেনারেল আসিম মুনির তাকে ক্ষমতায় ফিরে আসার পথে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

ইমরান খান ও আসিম মুনির

জামান পার্কের বাসা থেকে গত শনিবার দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, তার সঙ্গে আমার তো কোনো সমস্যা নেই, তবে আমার সঙ্গে বোধ হয় তার সমস্যা রয়েছে। তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থকদের বিরুদ্ধে সামরিক স্থাপনা ধ্বংসের অভিযোগ এবং সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের বিচারে একটি বিতর্কিত সেনা আইন ব্যবহার করার ঘোষণা দেওয়ার পর তিনি এসব কথা বললেন। গত ১৩ মে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে ইমরান খান জামান পার্কের বাসাতেই অবস্থান করছেন।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি কখনোই সেনাপ্রধানের বিরোধিতা করিনি। তবে আমার বিরুদ্ধে তার কাছে হয়ত কিছু আছে, যা আমার জানা নেই। সেনাপ্রধানের নির্দেশে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এমন অভিযোগের এক সপ্তাহ পর তিনি এ মন্তব্য করলেন। এ সময় তিনি ভক্ত-সমর্থকদের বলেন, যদি তাকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে তারা যেন কোনো ধরনের সহিংসতায় না জড়ান। কারণ শাহবাজ শরিফের সরকার একে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করবে।

ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর সমর্থকদের বিক্ষোভ

তেহরিক-ই-ইনসাফ পাকিস্তানের (পিটিআই) প্রায় পুরো শীর্ষ নেতৃত্বকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করে ইমরান খান বলেন, শুধু আমার বিরুদ্ধেই দেড় শতাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি যে কোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারি। কিন্তু আপনাদের ব্যাপারে যে ধারণা তৈরি হয়েছে, তাকে তো গ্রেপ্তার করতে পারবেন না।

গত বছরের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তখন থেকে তিনি কিছু সামরিক কর্মকর্তাকে এর জন্য দায়ী করে আসছিলেন। সম্প্রতি তিনি সেনাবাহিনীর ব্যাপারে আরও বেশি সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন। এমনকি পাকিস্তান ভাঙার জন্যও তিনি সেনাবাহিনীকে দায়ী করেন।

তিনি দাবি করেন, সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ইচ্ছে করলে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার ক্ষমতা ব্যবহার করে বাজওয়াকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি সেনাবাহিনীর মধ্যে হস্তক্ষেপ করতে চাননি। ফলে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্তও নেননি।

সরকারের কাছে আবারও নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে থাকা দলগুলো আমাদের ভয় পায়। আর সে জন্য আমাদের দমন করতে নানা কূট-কৌশলের আশ্রয় নেয়। আমাদের বিরুদ্ধে ডজন ডজন মামলা দায়ের করে। এ সময় তিনি দাবি করেন, সমীক্ষায় দেখা গেছে, এখন নির্বাচন হলে আমরা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করব। তাই তারা আমাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়।