পুতিনকে কি গ্রেপ্তার করবে দক্ষিণ আফ্রিকা!

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর পর দেশটি থেকে অবৈধভাবে অসংখ্য শিশুকে পুনর্বাসনের নামে মস্কোতে নিয়ে এসেছে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে এ নিয়ে মামলা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসিতে। ওই মামলায় পুতিনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছে আইসিসি।

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে রয়েছে আইসিসির পরোয়ানা

আগামী আগস্টে ব্রিকস সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে যেতে পারেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকা কি তখন পুতিনকে গ্রেপ্তার করবে! এ নিয়ে প্রশ্ন-জল্পনা তৈরি হলেও সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ) পার্টি।

পুতিনকে যাতে গ্রেপ্তার করা হয়, সেজন্য দক্ষিণ আফ্রিকায় সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে ডিএ পার্টি। আসলেই পুতিনকে গ্রেপ্তার করবে কিনা, তা নিয়ে কূটনৈতিক দ্বিধাদ্বন্দ্বের সম্মুখীন হয়েছে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র দক্ষিণ আফ্রিকা।

ব্রিকস জোটের সদস্য হচ্ছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। সংক্ষেপে যাকে বলে ব্রিকস।

দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃস্থানীয় বিরোধী দল ডিএ পার্টি মঙ্গলবার বলেছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় পা রাখেন, তবে তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।

ডিএ পার্টির নেতারা জানান, সেজন্যই সরকারের বিরুদ্ধে তারা আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন, যাতে রুশ প্রেসিডেন্টকে আটক এবং তাকে আইসিসির কাছে হস্তান্তর নিশ্চিত করা হয়। আদালতে এ নিয়ে তারা আবেদন করেছেন।

ডিএ পার্টির ছায়া বিচারমন্ত্রী গ্লিনিস ব্রেইটেনবাচ বলেন, আদালতে এই প্রি-এম্পটরি পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকা যাতে বাধ্যবাধকতাগুলো পালন নিশ্চিত করে।

বিরোধী দল মামলা করলেও দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়া আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের ডিপ্লোম্যাটিক ইমিউনিটি (কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা) দিয়েছে। যার কারণে পুতিনের ওপর আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি থাকা সত্ত্বেও জাতিসংঘ কনভেনশনের আওতায় তাকে গ্রেপ্তারে বাধ্যবাধকতা থাকছে না।

এদিকে মঙ্গলবারই ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ প্রেসিডেন্ট পুতিন শীর্ষ সম্মেলনের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা যাবেন কিনা, তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

তবে পেসকভ বলেন, রাশিয়ার যথাযথ প্রতিনিধিত্ব করা হবে। মস্কো আশা করে, ব্রিকস অংশীদাররা আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মতো অবৈধ সিদ্ধান্তে প্রভাবিত হবে না।

দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার বরাবরই রাশিয়ার ঘনিষ্ঠমিত্র হিসেবে পরিচিত। নিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানাতেও অস্বীকার করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

বিবিসি অবলম্বনে।