আপনি পড়ছেন

১৫ শতকের বিখ্যাত চীনা মুসলিম অ্যাডমিরাল ঝেং হি’র সম্মানে ওমানের ধোফার গভর্নরেটে একটি স্মৃতিস্তম্ভ উন্মোচন করা হয়েছে। ধোফার গভর্নর এইচএইচ সাইয়্যিদ মারওয়ান বিন তুর্কি আল সাঈদের পৃষ্ঠপোষকতায় নান্দনিক স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। খবর মিডলইস্টমনিটর ও ওমান অবজারভার।

oman unveils monumentঝেং হে’র স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ

উপকূলীয় শহর সালালাহতে নির্মিত দশ মিটার লম্বা এই স্মৃতিস্তম্ভটি একটি চীনা বাণিজ্যজাহাজকে চিত্রিত করে। এটি ছিল ঝেং হি’র বহরের সবচেয়ে বড় জাহাজ। সে সময় চীনের এই জাহাজবহর ইউরোপীয় জাহাজবহরকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল। মাস্কাট ও বেইজিংয়ের ঐতিহাবাহী বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে নির্মিত এই স্মৃতিস্তম্ভটি গত মঙ্গলবার উন্মোচন করা হয়। থ্রি-ডি প্রিন্টারে নির্মাণে এই স্মৃতিস্তম্ভ তৈরিতে সহযোগিতা করে চীনা দূতাবাস ও ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ওমানে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি লিংপিং বলেন, পশ্চিম মহাসাগরে ঝেং হি’র যাত্রা ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থানে ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে এসব দেশের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে সহজতর করেছে।

monument dedicated to chinese muslim admiral zheng heঝেং হে’র স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ

ওমান-চীন ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান খালিদ বিন সালিম আল-সাইদি বলেন, ঝেং হি মনুমেন্ট ওমান ও চীনের সভ্যতার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও নিরবচ্ছিন্নতার প্রতীক। উভয় দেশের নেতারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মাস্কাট ডেইলি জানায়, বেইজিং ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেকচারালের ডিজাইনে তৈরি এ স্মৃতিস্তম্ভটির ধারণা নেওয়া হয়েছে মেরিটাইম সিল্ক রোড থেকে, যেখানে ভ্রমণ করেছিলেন ঝেং। তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া এবং পূর্ব আফ্রিকা পর্যন্ত সাতবার ধোফার পৌঁছেছেন।

চীনের ইতিহাসবিদদের দাবি, ঝেং হি চীনের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ পরিব্রাজক ও নৌ সেনাপতি ঝেং হি। ১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের ৭০ বছরেরও বেশি আগে তিনি আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন।

ঝেং হি ১৩৭১ সালে দক্ষিণ চীনের ইউনান অঞ্চলের একটি ধর্মপ্রাণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশবে মিং সাম্রাজ্যের সৈন্যবাহিনী তাদের শহরে হামলা চালিয়ে তাকে বন্দি করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে রাজপ্রাসাদে চাকর হিসেবে কাজ করতে হয়। তবে যুবরাজ ঝু ডি’র সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ঝু ডি সম্রাট হলে তিনি ঝেং হি কে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেন এবং তাকে সম্মানসূচক “ঝেং” পদবী দেওয়া হয়। ফলে তিনি ‘ঝেং হি’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

১৪০৫ সালে সম্রাট ঝু ডি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্যসম্পর্ক স্থাপনের জন্য সুবিশাল জাহাজের বহর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং ঝেং হিকে এই অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মনোনীত করেন। ১৪০৫ থেকে ১৪৩৩ সাল পর্যন্ত ঝেং মোট সাতটি অভিযান পরিচালনা করেন। এসব অভিযানে তিনি হিন্দুস্তান, আধুনিক মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ইরান, ওমান, ইয়েমেন, সৌদী আরব, সোমালিয়া, কেনিয়াসহ আরও অনেক দেশে যান। তার প্রতিটি অভিযানে কমপক্ষে ৩০ হাজারের মতো মানুষ অংশ নিতো।

ঝেং হির জাহাজগুলো শুধুমাত্র রাজনীতি বা অর্থনীতিকেই প্রভাবিত করেনি। বরং তিনি ও তার মুসলিম উপদেষ্টারা যেখানেই গিয়েছেন, ইসলাম প্রচার করেছেন। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায় পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস। এর নেপথ্যে বড় অবদান রয়েছে এই ঝেং হির।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.