যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ান বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর, চীনের ক্ষোভ

চীনের বিরোধিতা উপেক্ষা করে তাইওয়ানের সঙ্গে নতুন একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউএস-তাইওয়ান ইনিশিয়েটিভ অন টোয়েন্টিফার্স্ট সেঞ্চুরি ট্রেড শিরোনামের চুক্তিটি শুল্ক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য বিধিমালা উন্নয়নে দুই পক্ষের অংশীদারিত্ব জোরদার করবে বলে স্বাক্ষরকারীরা আশা প্রকাশ করেছেন। চীন সরকার এ চুক্তিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

একুশ শতকের বাণিজ্য-সংলাপের রূপরেখা নিয়ে চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ান

দুই পক্ষের বাণিজ্য সংলাপকে নতুন রূপরেখায় উন্নীত করতে তাইওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের রাষ্ট্রদূত ঝিয়াও বি-খিম ও আমেরিকান ইনস্টিটিউট ইন তাইওয়ানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনগ্রিড লারসন বৃহস্পতিবার ভার্জিনিয়ায় চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। তাইওয়ানের বাণিজ্যমন্ত্রী জন দেং ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দূতের কার্যালয়ের (ইউএসটিআর) ডেপুটি দূত সারাহ বিয়াঞ্চি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কুটনৈতিক সম্পর্ক নেই। এ অবস্থায় নিজ নিজ দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুই পক্ষ বাণিজ্য সম্পর্ক পরিচালনা করে থাকে। হাই-টেক শিল্পের অন্যতম পরাশক্তি তাইওয়ান হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নবম বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২০ সালে দুই পক্ষের বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৬০ কোটি ডলার।

চুক্তির বিষয়ে ইউএসটিআর এক বিবৃতিতে বলেছে, এ চুক্তি দুই পক্ষের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে জোরদার ও গভীর করবে। এতে করে বাণিজ্য-সম্পর্কের দুই প্রান্তে কাস্টমস চেক সহজতর হবে, বিধিবিধান ও প্রক্রিয়াগুলো উন্নত হবে এবং দুর্নীতিবিরোধী ব্যবস্থা চালু হবে।

ইউএসটিআর-এর মুখপাত্র স্যাম মিশেল বলেছেন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের এ গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকে পৌঁছতে আমাদেরকে সহায়তা করায় তাইওয়ানি অংশীদারদের ধন্যবাদ জানাই। নতুন চুক্তিতে বাণিজ্য-আলোচনার যে আওতা নির্ধারণ করা হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে বাণিজ্যের নতুনতর ক্ষেত্রগুলোর বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা সামনে তাকিয়ে আছি।

নতুন চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে তাইওয়ানের মন্ত্রিসভার মুখপাত্র অ্যালান লিন বলেছেন, এটা কেবল ঐতিহাসিক চুক্তি নয়, এ এক নতুন সূচনা। আমরা তাইওয়ানের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) পথে এগিয়ে যাব।

চুক্তির খবরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাইওয়ানের মর্যাদা সংক্রান্ত চুক্তিগুলো লঙ্ঘন করছে। আমরা চাই তাইওয়ান সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ বন্ধ হোক।

আজ শুক্রবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাইওয়ানের সঙ্গে সব ধরনের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ও বিনিময় বন্ধ করা এবং তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে ভুল সংকেত পাঠানো থেকে বিরত থাকা।

তিনি আরও বলেন, স্বার্থপর বিচ্ছিন্নতাবাদী এজেন্ডা-তাড়িত তাইওয়ানি কর্তৃপক্ষ তাইওয়ানের স্বার্থ ও সেখানকার মানুষের স্বার্থ বিসর্জন দিতে, তাইওয়ানকে বিকিয়ে দিতে দ্বিধান্বিত নয়। নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে তারা তাইওয়ানকে প্লেটে তুলে ‍যুক্তরাষ্ট্রের সামনে রেখেছে।