সামরিক শক্তির বাড়াবাড়িই ইসরায়েলের দুর্বলতা!

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অভিযান চালাচ্ছে। তাদের হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ ফিলিস্তিনি। এতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। সামরিক বাহিনীর শক্তিমত্তা প্রদর্শনের কারণেই ইসরায়েল আজ বিশ্বের বুকে নেতিবাচক একটি দেশ। এই বাড়াবাড়ির মধ্যেই ইসরায়েলের দুর্বলতা দেখছেন ব্লুমবার্গের কলামিস্ট ম্যাক্স হেস্টিংস। তিনি এক নিবন্ধে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। হেস্টিংস ‘দ্য অ্যাবিস: নিউক্লিয়ার ক্রাইসিস কিউবা ১৯৬২‘ বইয়ের লেখকও তিনি। ব্লুমবার্গ।

পুতিনের সঙ্গে নেতানিয়াহু

নিবন্ধে বলা হচ্ছে, হামাসসহ ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা প্রতিনিয়ত নতুন কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। ফলে নানা প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীকে আরও নিষ্ঠুর হতে হচ্ছে। তাদের হাতে প্রতিনিয়ত মরছে নিরীহ ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনিদের মতোই ইসরায়েলের আরব নাগরিকরাও দুর্দশায় পতিত হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় মরছে ইসরায়েলিরাও।

ইঞ্চি ইঞ্চি করে ইসরায়েল পশ্চিম তীরকে নিজেদের সীমানার সঙ্গে সংযুক্ত করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়। তারা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান চায়। কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সর্বদা ‘বৃহত্তর ইসরায়েল‘ গড়ার স্বপ্ন দেখেন।

নেতানিয়াহু একটি জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যারা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে উগ্র ডানপন্থী সরকার গঠন করেছে। তার নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ঘোষণা করেছেন, ফিলিস্তিনি শাসিত গাজাও ইসরায়েলের অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। তিনি এই হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন- ফিলিস্তিনিরা সৌদি আরব, ইরাক কিংবা ইরানের মতো দেশে চলে যেতে পারে।

নেতানিয়াহুর অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ একজন স্বীকৃত ইহুদি আধিপত্যবাদী। তার বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি বসতি সরিয়ে দিয়ে অর্ধ মিলিয়ন ইহুদি বসতি নির্মাণ প্রচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। ইসরায়েলের সীমানার মধ্যে থাকা দুই মিলিয়ন আরবদের নাগরিকদের অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন স্মোট্রিচ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন নেতানিয়াহু সরকারের কিছু নীতির তীব্র সমালোচনা করেছে। কারণ ইসরায়েলে স্বাধীন বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক আধিপত্যের অধীনস্থ করতে চায় নেতানিয়াহু সরকার। তবে একটি অপ্রতিরোধ্য বাস্তবতা হলো ওয়াশিংটন যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে কম মনোযোগ দিচ্ছে। এমনকি ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতি ইসরায়েলের উদাসীনতাকেও মেনে নিচ্ছে ওয়াশিংটন।

এ অবস্থায় দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে এগিয়ে আসবে না ইসরায়েলি সামরিক এবং রাজনৈতিক শক্তি। তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বাস্তবতা সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করবে। ইসরায়েল মনে করে, বর্তমানে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। ফলে কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কল্পনা করা অসম্ভব।