বাংলাদেশে দুটি স্মার্ট সিটি গড়ার প্রস্তাব, খরচ ১ লাখ কোটি টাকা

বাংলাদেশে চীনা অর্থায়নকৃত চলমান প্রকল্পগুলোতে ধীরগতিতে অর্থ ছাড় করা হচ্ছে। তবে এখন আরেকটি চীনা কোম্পানি দুটি মেগা প্রকল্পের জন্য প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা বা প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের একটি উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে।

বাংলাদেশে ২ স্মার্ট সিটি গড়তে ১ লাখ কোটি টাকার প্রস্তাব চীনের

২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের ২৭টি প্রকল্পের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছিল। এছাড়া ৮.০৮ বিলিয়ন ডলারের ৯টি প্রকল্পের জন্য ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। এর মধ্যে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মাত্র ৪.৪৭ বিলিয়ন ডলার ছাড় করা হয়েছে।

এখন বেইজিংভিত্তিক একটি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নির্মাণ সংস্থা চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কর্পোরেশন (সিআরবিসি), কেরানীগঞ্জ ও আশুলিয়ায় দুটি উদ্ভাবনী স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে এই বিশাল বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।

প্রস্তাবিত বিনিয়োগের মধ্যে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন কেরানীগঞ্জে ওয়াটারফ্রন্ট স্মার্ট সিটি প্রকল্পের জন্য ধরা হয়েছে ৫২ হাজার কোটি টাকা।

এছাড়া তুরাগ নদীর বন্যা প্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণ এবং আশুলিয়ায় কমপ্যাক্ট টাউনশিপ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ৪৭ হাজার কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই এই দুটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ব্যাপক পরিবেশগত জরিপ সিআরবিসির অর্থায়নে সম্পন্ন হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চাইনিজ ইকোনমিক জোন নির্মাণের জন্য এরই মধ্যে চুক্তি পেয়েছে চীনা কোম্পানিটি। যদি এটি কেরানীগঞ্জ ও তুরাগে মেগা প্রকল্পের চুক্তিও পায়, তাহলে প্রকল্পটি বিলম্বিত হতে পারে।

তারা বিনিয়োগকারী সংস্থার নিজেই প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘সিআরবিসি পরিচালিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ভিত্তিতে এবং তাদের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পরবর্তীতে পুরো দায়ভার সরকারের ওপর বর্তাবে। এটি সরকারের জন্য সুবিধাজনক হবে না।'

তিনি উল্লেখ করেছেন, এ ধরনের মেগা প্রকল্পগুলো সাধারণত একটি স্বচ্ছ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত একটি কোম্পানির দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত। সম্ভাব্যতা সমীক্ষাও স্বাধীনভাবে করা উচিত। এই পদ্ধতি আরও যুক্তিসঙ্গত মূল্যায়ন নিশ্চিত করবে।