‘শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া’য় এমপির নির্দেশে শিক্ষক বরখাস্ত

'জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া’য় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই শিক্ষকের নাম মাসুদুর রহমান। তিনি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার দড়িকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

নাটোর ম্যাপ

গত বুধবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়। জানা গেছে, নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের নির্দেশে শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

শিক্ষক মাসুদুর রহমানের দাবি, সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের প্রতিপক্ষ নেতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খ ম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় এমপি আব্দুল কুদ্দুসের নির্দেশে শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ গোলাম নবী বলেন, এমপি মহোদয়ের নির্দেশে শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে প্রথমে শোকজ এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শিক্ষক মাসুদুর রহমান বলেন, গত ১৪ আগস্ট শোক দিবসের প্রস্তুতিসভা ও একটি গণমিছিলে অংশ নেই। মিছিলে আমি কোনো সরকারবিরোধী স্লোগান দিইনি। তাছাড়া সরকারি কর্মচারী হিসেবে সরকার ঘোষিত সকল জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। আমিতো কোনো অপরাধ করিনি। কিন্তু আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। আমার পরিবার আছে। অর্ধেক বেতন দিয়ে আমি কীভাবে চলব? আমি বরখাস্তের এই আদেশ প্রত্যাহার চাই।

শিক্ষক মাসুদুর রহমান আরওবলেন বলেন, শোক দিবসের ওই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এবং নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আহম্মদ আলী মোল্লা। তিনি এমপি কুদ্দুসের প্রতিপক্ষ। আমার ধারনা, প্রতিপক্ষ নেতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কারণে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন শিক্ষক মাসুদুর রহমান। আমার নেতাকর্মীরা তাকে মেরে হাত-পা ভেঙে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি বলেছি মারধর করা দরকার নেই, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব। পরে আমি জেলা শিক্ষা অফিসারকে বলেছি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।