রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও গাম্বিয়ার মামলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক, নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল উজরা জেয়া জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার সময় প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন।

উজরা জেয়া (বায়ে) এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা। বৈঠকে তারা বিভিন্ন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন।

বৈঠকে উজরা জেয়া প্রধানমন্ত্রীকে জানান যে তারা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জন্য ১১৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো শুরু করার আগে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা উচিত অন্যথায় এই অঞ্চল নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়বে কারণ রোহিঙ্গারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা গাম্বিয়ার আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) দায়ের করা মামলায় আন্তর্জাতিক সমর্থনও চেয়েছেন। এই মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে। সাতটি দেশ ফ্রান্স, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক ও মালদ্বীপ মামলায় সম্মতি দিয়েছে।

বৈঠকে তারা বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়েও আলোচনা করেন। উজরা জেয়া বলেন, তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন চান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন যে তারাও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চান। জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানো হবে।

গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘের বিশেষ দূত অ্যালিস ওয়াইরিমু এনদেরিতুও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান।

এছাড়া মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।