অথচ নিহত তরুণের মা বলছেন, ‘আমি তার জন্য গর্ব করি’

হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে গত শনিবার থেকে গাজায় বিরামহীন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যেই ইসরায়েলে হামলা চালাতে গিয়ে নিহত হন গাজার ২২ বছর বয়সী তরুণ হামজা। তার এ মৃত্যুতে দুঃখ নয়, বরং গর্ব করছেন তার মা আজব মুসা। হামজার ভাইও বলছেন একই কথা, আমার ভাইকে নিয়ে সবাই গর্ব করে। খবর এএফপি ও বিবিসি।

আজব মুসা

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সে হামলায় হতভম্ব ইসরায়েলি বাহিনী সেদিন থেকেই গাজায় অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে হাজার হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। সর্বশেষ গাজা ছেড়ে যাওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। মনে করা হচ্ছে, গাজায় স্থল হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে তেলআবিব।

এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর দুইদিন পর সোমবার ফের ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালাতে গিয়েছিলেন ২২ বছর বয়সী হামজা। সেখানে তিনি ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিহত হন। এ ব্যাপারে তার মা আজব মুসার (৪৫) সঙ্গে কথা বলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তাদের তিনি বলেন, ছেলে হামজার জন্য তিনি দুঃখ করছেন না, গর্ববোধ করছেন। কারণ তিনি তার ছেলের এই কাজের কথা জানতেন এবং তাকে এ কাজে উৎসাহিত করেছিলেন।

ইসরায়েলে হামাসের হামলা

আজব মুসা বলেন, হামজা আমাকে জানিয়েছিল, সে কী করতে যাচ্ছে। সব শুনে আমি তার পক্ষ নিয়েছিলাম। এমনকি আমি বারবার তাকে বলেছি, সে যেন তার এই পরিকল্পনা থেকে কোনোভাবেই সরে না যায়। তিনি মন্তব্য করেন, শুধু হামজাই নয়। আমার যদি ১০টি ছেলে থাকত, তাহলে আমি সবাইকেই এ কাজ করতে পাঠাতাম। কারণ আমাদের নিজেদের হারিয়ে ফেলা ভূমি ফিরে পেতে হবে।

হামজার দুই বছরের ছোট ভাই মোহাম্মদ জানান, বর্তমানে তারা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বুর্জ আল–শেমালি শহরের একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থীশিবিরে অবস্থান করছেন। তার ভাই হামজা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মোহাম্মদ নিজে এ ধরনের কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত নন। তবে ভাই যা করেছেন, সুযোগ পেলে এমন কিছু তিনি নিজেও করতে চান। কারণ তিনি তার ভাইকে গিয়ে গর্বিত। শুধু তিনি নন, এখানকার (লেবানন) সবাই হামজাকে নিয়ে গর্ব করেন।

লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে সহিংসতা এখনো পর্যন্ত সীমিত পর্যায়েই। তবে লড়াই বাড়লে লেবাননও এই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে বলে আশঙ্কা রয়েছে।