ত্রাণ নিয়ে গাজায় ঢুকেছে ২০টি ট্রাক, একটিতে শুধু কফিন

ইসরায়েলের হামলা-অবরোধে বিপর্যস্ত গাজায় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ঢুকেছে ২০টি ট্রাক। শনিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরের পর মিসরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ওষুধ ও খাবার নিয়ে এসব ট্রাক গাজায় ঢুকে। একটি ট্রাকে ছিল কফিনবোঝাই। তবে কোনো গ্যাস বা জ্বালানি ঢুকতে দেয়নি ইসরায়েল। এই ত্রাণ তৎপরতাকে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার জন্য ‘সাগরে এক ফোঁটা পানি’ঢালার সঙ্গে তুলনা করেছে জাতিসংঘ। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও রয়টার্সের।

রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় ঢুকছে ত্রাণের ট্রাক

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিকভাবে ইসরায়েলে হামলা চালায়। সেদিন থেকেই গাজা অবরোধ করে উপুর্যপরি বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। বিমান হামলায় গাজার বেশির ভাগ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে মানুষ। এরইমধ্যে ইসরায়েল গাজায় খাবার, পানি, গ্যাস-বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় সেখানে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।

গাজাবাসীর এমন সঙ্কটে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে ইসরায়েল সেখানে মানবিক ত্রাণের ট্রাক ঢুকতে দিয়েছে। অবরুদ্ধ গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ নিয়ে কয়েকদিন ধরেই রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষায় ছিল এসব ট্রাক।

স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরে ক্রসিংটি খুলে দেওয়ার পর গাজায় ঢুকতে শুরু করে ট্রাকগুলো। সেখানে কাজ করেন জাতিসংঘ,বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট কর্মীরা। গাজায় প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য সবগুলো ক্রসিং পয়েন্ট রয়েছে ইসরায়েলের সঙ্গে, কেবল মিসরের রাফাহ একমাত্র ক্রসিং যা ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিমান হামলার কারণে রাফাহ ক্রসিংও বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে মিসর।

জাতিসংঘ কর্মীরা জানিয়েছেন, গাজায় ২০টি ট্রাক ঢুকতেই অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। তবে ওইসব ট্রাকে কোনো জ্বালানি ছিল না। জ্বালানির ট্রাক ঢুকতে দেয়নি ইসরায়েল। একটি ট্রাকে শুধু কফিন রাখা ছিল।

এদিকে জাতিসংঘসহ ত্রাণসহায়তা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০ ট্রাক ত্রাণ সহায়তা গাজাবাসীর চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য। একে ‘সমুদ্রে এক ফোটা পানি’ বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, গাজায় ত্রাণ ঠুকেছে, এটি গুরুত্বপূর্ণ। তবে গাজার যা পরিস্থিতি, তাতে ২০ ট্রাক নয়, প্রতিদিন ১০০ ট্রাক ত্রাণ দরকার। এই ত্রাণ সাগরে একফোটা পানির ঢালার মতো।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তায় জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সির কমিউনিকেশন ডিরেক্টর জুলিয়েটে তৌমা বলেন, গাজার বাসিন্দাদের জন্য জ্বালানি দরকার। আমরা যদি গাজাবাসীকে সহায়তা করতে চাই, তবে সেটির জন্য জ্বালানি দরকার। বিশেষ করে পানি সরবরাহ কেন্দ্রের জন্য, পাম্প চালানোর জন্য জ্বালানি প্রয়োজন। কেননা, গাজায় পানি ফুরিয়ে এসেছে, কোথাও কোথাও পানি মিলছে না একেবারেই।