ঘূর্ণিঝড় কিয়ারানের তাণ্ডব, ইতালিতে বন্যায় ছয়জনের মৃত্যু

ইউরোপে প্রবল ঘূর্ণিঝড় কিয়ারান এখনও তাণ্ডব থামায়নি। ঘূর্ণিঝড়টির কারণে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় ইতালির মধ্যবর্তী তাস্কানি অঞ্চলে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে উপকূলীয় বেশ কিছু শহর ও গ্রাম। খবর আল জাজিরার।

প্রবল বর্ষণে বন্যায় ভেসে গেছে ইতালির ফ্লোরেন্স শহর

ইতালীয় নাগরিক সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেন্ট্রাল ইতালির তাস্কানি অঞ্চলে শুক্রবার তিন ঘণ্টায় ২০০ মিলিমিটার (প্রায় আট ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে দেখা দিয়েছে বন্যা।

তাস্কানির গভর্নর ইউজেনিও জিয়ানি বলেন, উপকূলীয় শহর লিভোর্নো থেকে মুগেলো উপত্যকা পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ৬ জন মারা গেছেন। নদীগুলোর তীর উপচে শহর ও গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর্নো নদীর উপচে পড়া পানি ঐতিহাসিক শহর ফ্লোরেন্সকে প্লাবিত করেছে।

জিয়ানি বলেন, ইতালিতে গত ১০০ বছরের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।

ইতালীয় বার্তা সংস্থা এএনএসএ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ফ্লোরেন্সের উত্তরে প্রাটো শহরের দুই বয়স্ক ব্যক্তি রয়েছেন। তারা একটি গাড়িতে যাচ্ছিলেন। পানির তোড়ে গাড়িটি উল্টে যায়।

ঝড় ও বন্যার কারণে ফ্লোরেন্স ও মিলানে উচ্চগতির ট্রেন চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। আনুমানিক ৪৮ হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় পড়েছে।

ইতালি সরকার ওই অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে সহায়তার জন্য প্রাথমিকভাবে ৫৪ লাখ ডলার বরাদ্দ ঘোষণা করেছে।

ইতালির নাগরিক সুরক্ষা মন্ত্রী নেলো মুসুমেসি বলেন, ইতালির আবহাওয়া আরও গ্রীষ্মমন্ডলীয় হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি ২০ বছর আগের তুলনায় মারাত্মকভাবে ভিন্ন, এটি সবার কাছে স্পষ্ট।

জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই কিয়ারানের মতো ঝড় ভারী বৃষ্টিপাত বয়ে এনেছে। এতে ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি আরও গুরুতর হয়ে দেখা দিচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় কিয়ারানের তাণ্ডবে ইউরোপজুড়ে গত দুইদিনে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ফ্রান্সে পাঁচজন, যুক্তরাজ্যে ছয়জন, আলবেনিয়াতে একজন, জার্মানিতে একজন এবং বেলজিয়ামে একজন মারা গেছেন।