আজারবাইজান-আর্মেনিয়া শান্তি আলোচনায় ধাক্কা

আগামী সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় আর্মেনিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নেবে না আজারবাইজান। ১৬ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এবং আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের পক্ষপাতমূলক মন্তব্যের কারণে আজারবাইজান এই শান্তি আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। ১৫ নভেম্বর, বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির শুনানিতে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ও'ব্রায়েনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এই বিবৃতি দিয়েছে আজারবাইজান।

ও'ব্রায়েন হাউজ কমিটিকে বলেছেন, ‘১৯ সেপ্টেম্বরের যুদ্ধের পর আজারবাইজানের সঙ্গে কিছুই স্বাভাবিক হবে না যতক্ষণ না আমরা শান্তির পথে কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি। আমরা অনেক উচ্চ পর্যায়ের সফর বাতিল করেছি। আজারবাইজানের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছি।'   

আজারবাইজানীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের পক্ষপাতমূলক আচরণ দেশটির মধ্যস্থতার ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এই মন্তব্যকে আজারবাইজান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি আঘাত বলে মনে করা হচ্ছে।   

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মধ্যস্থতাকারী হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই আর্মেনিয়াকে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ করতে অনুরোধ করেনি। আজারবাইজানের অঞ্চলগুলো থেকে দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতেও বলেনি। এক্ষেত্রে তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।' 

এদিকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বৃহস্পতিবার বলেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আজারবাইজানের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করার রাজনৈতিক ইচ্ছা অটুট রয়েছে। 

এর আগে পাশিনিয়ান এবং আজারবাইজানীয় প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় কয়েক দফা আলোচনা করেছেন। তবে গত মাসে আলিয়েভ ফ্রান্সের পক্ষপাতমূলক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে স্পেনে একটি বৈঠকে যোগ দিতে অস্বীকার করেছেন।

উল্লেখ্য, নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে একাধিকবার যুদ্ধে জড়িয়েছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া। আন্তর্জাতিকভাবে এই অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভূখন্ড হিসেবে স্বীকৃত। তবে ১৯৯৪ সালে আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এটি দখল করে নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ২০২০ সালে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে কারাবাখের কিছু অংশ আজারবাইজান পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। অবশেষে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পরাজিত করে কারাবাখ মুক্ত করে আজারবাইজান।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি