অনাহারে দিন কাটাচ্ছে গাজার অর্ধেক বাসিন্দা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় না খেয়ে অভুক্ত অবস্থায় কাটাচ্ছে অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা। তার ওপর যখন তখন মাথার ওপর পড়ছে বোমা। নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। শুক্রবার গাজা পরিদর্শন করে এমনটিই জানিয়েছেন জাতিসংঘের ডব্লিউএফপির উপপরিচালক কার্ল স্কাউ।

গাজায় একদিনে ইসরায়েলি বোমা হামলা, অন্যদিকে খাবারের জন্য চলছে হাহাকার

জাতিসংঘের উর্ধ্বতন এই ত্রাণ কর্মকর্তা গাজায় ঘুরে এসে এক্স পোস্টে বলেন, গাজা উপত্যকায় পর্যাপ্ত খাবার নেই। মানুষ না খেয়ে থাকছে। অন্তত ৩৬ ভাগ বাসিন্দা পুরোপুরি অভুক্ত কাটাচ্ছে।

কার্ল স্কাউ বলেন, গাজার অর্ধেক বাসিন্দাই অনাহারে কাটাচ্ছে, কারণ সেখানে যুদ্ধ চলছে। আর প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই প্রতিদিন খেতে পাচ্ছে না।

হামাস নির্মূলের নামে নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল

ইসরায়েলির বিমান হামলার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তার অতি সামান্য অংশই গাজায় প্রবেশ করতে পারছে। গাজার যুদ্ধ পরিস্থিতি ত্রাণ সরবরাহ প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে।

একদিনে খাবারের জন্য হাহাকার, অন্যদিকে প্রাণ বাঁচানোর আর্তি। ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলায় প্রতিদিন শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন।

ইসরায়েল বলছে, হামাসকে নির্মূল করতে এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যেতে হবে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচ্ট শনিবার বলেন, যে কোনও বেসামরিক মানুষের মৃত্যু বেদনাদায়ক, কিন্তু আমাদের কাছে কোনো বিকল্প নেই।

ইসরায়েলের এই সামরিক কর্মকর্তা দাবি করেন, গাজা উপত্যকায় যতটা সম্ভব ত্রাণ পৌঁছাতে দেওয়ার জন্য আমরা সবকিছু করছি।

যদিও জাতিসংঘ কর্মকর্তারা দেখে এসেছেন, গাজার সর্বত্র চলছে খাবারের জন্য হাহাকার। মিশরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে মানবিক ত্রাণের ট্রাক ঢুকছে সীমিত, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তেরে ঢুকে হামলা চালায়। এতে একদিনেই প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি ইসরায়েলের। আর ২৪০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে আসে হামাস।

সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পাশাপাশি গাজার সব সীমান্ত পথ আটকে খাবার, পানি, গ্যাস-বিদ্যুত সরবরাহ সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ গাজায় দিনেরাতে অব্যাহত বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযানও শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

এতে গত ৬৪ দিনে গাজায় নিহত হয়েছে ১৭ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছে ৪৬ হাজারের বেশি। মাঝে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ২৪ নভেম্বর থেকে এক সপ্তাহ যুদ্ধবিরতি ছিল। যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়া মাত্র হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েল।