আজারবাইজান: আর্মেনিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তি সব সমস্যার সমাধান করবে না

আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেহুন বায়রামভ বলেছেন, আর্মেনিয়ার সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করার অর্থ এই নয় যে প্রতিটি সমস্যার সমাধান হবে। ২৫ ডিসেম্বর, সোমবার স্থানীয় গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।

জেহুন বায়রামভ

বায়রামভ বলেছেন, ‘শান্তি প্রক্রিয়া এক পক্ষের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে এক্ষেত্রে উভয় পক্ষকেই সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আজারবাইজানের পূর্ণ সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের পরে, আমরা আর্মেনিয়ার রাজনৈতিক নেতৃত্বের বার্তাগুলো গভীরভাবে অনুসরণ করছি।'  

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে ইতিবাচক ইশারা পাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেছেন, আজারবাইজান শান্তির দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ আশা করে।

আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, শান্তি চুক্তি সম্পর্কিত সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ আঞ্চলিক অখণ্ডতার পারস্পরিক স্বীকৃতির ভিত্তিতে হতে হবে।

বায়রামভ উল্লেখ করেন, তার দেশ গত নভেম্বরে শান্তি চুক্তির জন্য আর্মেনিয়ার পরবর্তী প্যাকেজ প্রস্তাব পেয়েছে। এই বিষয়ে এক মাস কাজ করার পর আজারবাইজান তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। 

তিনি বিশ্বাস করেন, এই প্রক্রিয়াটি অব্যাহত থাকলে ২০২৪ সালে শান্তিচুক্তি নিয়ে পরবর্তী বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেছেন, ‘আজারবাইজানের এই বিষয়ে একটি বাস্তববাদী এবং আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। কিন্তু যখন আমরা শান্তি চুক্তির কথা বলি, তখন আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে যে এটি সবকিছুর শতভাগ সমাধান করবে না।'  

এদিকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান সম্প্রতি জানিয়েছেন, আজারবাইজান যদি দুই দেশের নেতাদের মধ্যে সম্মত নীতিগুলো অনুমোদন করে, তবে অদূর ভবিষ্যতে দেশটির সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হবে। 

এই মাসের শুরুতে, বাকু এবং ইয়েরেভান একটি যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছিল, তারা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরে আস্থা নির্মাণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে একটি চুক্তি করেছে।

সদিচ্ছার চিহ্ন হিসাবে, প্রতিবেশি এই দুই দেশ বন্দী বিনিময়ে সম্মত হয়েছে। আজারবাইজান ৩২ জন আর্মেনিয়ানকে মুক্তি দিয়েছে। এদের বেশিরভাগই ২০২০ সালের শেষের দিকে বন্দী হয়েছিল। অপরদিকে আর্মেনিয়া ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আটক দুই আজারবাইজানীয় সৈন্যকে হস্তান্তর করেছে।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ ককেশাসের এই দেশ দুটি কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এক দশক ধরে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আর্মেনিয়ান অবৈধ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানের মাধ্যমে এই অঞ্চলটি পুনরুদ্ধার করে আজারবাইজান। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত, কিন্তু এতদিন ধরে এই অঞ্চলটি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দখল করে রেখেছিল। 

সূত্র: ডেইলি সবাহ