ইউক্রেনকে আরও ২৫০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের

ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা হিসেবে আরও ২৫০ মিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ অনুমোদন দিয়েছে হোয়াইট হাউস। বুধবার নতুন সহায়তা অনুমোদনের পর মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সর্বশেষ প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা, আর্টিলারি এবং ছোট অস্ত্র গোলাবারুদ ও ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী অস্ত্র। খবর বিবিসির।

পশ্চিমা মিত্রদের অস্ত্র সহায়তা নিয়েই রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে ইউক্রেন

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটি আপাতত শেষ সহায়তা প্যাকেজ। এরপর কোনো সহায়তার জন্য নতুন করে মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন নিতে হবে।

হোয়াইট হাউস সূত্র জানিয়েছে, বুধবারের সহায়তা প্যাকেজের অস্ত্র পেন্টাগনের বিদ্যমান মজুদ থেকেই দেওয়া হচ্ছে। এতে কংগ্রেসের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি ব্লিঙ্কেন সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করে বলেন, ইউক্রেনের আত্মরক্ষা এবং দেশটির ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করতে সহায়তা করে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কংগ্রেসের পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য।

ব্লিঙ্কেন বলেন, মিত্র হিসেবে ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়া আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কেননা, রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয়রা নিজেদের দেশ ও স্বাধীনতা রক্ষায় লড়াই করছে।

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর থেকেই দেশটিকে অস্ত্রসহ সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও যুদ্ধে আক্রান্ত ইউক্রেনকে সহায়তা প্রচেষ্টায় মার্কিন কংগ্রেসের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে, তবে নিন্মকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ট রিপাবলিকানদের হাতে সম্প্রতি একটি সহায়তা প্যাকেজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ইউক্রেনের জন্য ৫০ বিলিয়ন ডলার এবং গাজায় যুদ্ধরত ইসরায়েলকে ১৪ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার একটি প্রস্তাব আটকে দিয়েছে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট। বাইডেন প্রশাসনের ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে বিরোধী দল রিপাবলিকানদের পাশাপাশি বার্নি স্যান্ডার্সের নেতৃত্বে ডেমোক্রেটরাও ভোট দিয়েছেন।

বার্নি স্যান্ডার্সসহ ডেমোক্রেটরা গাজায় ইসরায়েলি নির্বিচার হামলায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গাজায় গত প্রায় তিনমাস ধরে টানা হামলায় ২১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৫৫ হাজার আহত হয়েছে। হতাহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে সহায়তা ধীর হয়ে যাওয়ায় বিপাকে রয়েছে ইউক্রেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেও মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সহায়তা প্রস্তাবে রাজি করতে ব্যর্থ হন।

জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন, পশ্চিমা মিত্ররা যদি সহায়তা না করে তবে ইউক্রেনের আত্মরক্ষাও লড়াই ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তা কমে যাওয়ায় এরইমধ্যে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী পিছু হটতে শুরু করেছে এবং সর্বশেষ মঙ্গলবার রাশিয়ান বাহিনী দেশটির পূর্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলে নেওয়ার দাবি করেছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেছেন, ইউক্রেনের বাহিনীকে পিছু হটিয়ে রুশ সৈন্যরা পূর্ব ইউক্রেনের মারিঙ্কা শহর দখল করে নিয়েছে। শহরটিতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে লড়াই চলছিল।