বরিশালে শেখ হাসিনা: আমরা রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণে, ওরা করে হত্যা

আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী দল। এই সন্ত্রাসী দলের রাজনীতি করার অধিকার বাংলাদেশে নেই। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে, আর ওদের রাজনীতি মানুষ হত্যায়। তাদের মানুষ আর চায় না। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বরিশালে জনসভার মঞ্চে ছোটবোন শেখ রেহানাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশে আরো উন্নয়ন হবে। আমরা দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকায় দেশের উন্নয়ন হয়েছে। আবারও ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করুন।

তিনি বলেন, আমরা যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করি, তখন ওই বিএনপি-জামায়াত করে অগ্নিসন্ত্রাস। রেললাইনের ফিস প্লেট ফেলে দিয়ে, বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যার ফাঁদ পাতে। রেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। মা-সন্তানকে বুকে জড়িয়ে রেখেছে- এই অবস্থায় আগুনে পুড়ে কাঠ হয়ে গেছে। এই দৃশ্য পুরো বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। আমি ধিক্কার জানাই বিএনপি-জামায়াতকে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমি বরিশালে উপস্থিত হয়েছি। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন, সেই লক্ষ্যে উপস্থিত হয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শূন্য হাতে বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি যখন দায়িত্ব নেন তখন মাথাপিছু আয় ছিল ৯১ ডলার। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার তিন বছরের মধ্যে তা ২৭৭ ডলারে উন্নীত করেন। তিনি অসহায়দের জন্য অকাতরে সব বিলিয়ে দেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ঘাতকরা জাতির জনককে হত্যা করে। তবে কেবল জাতির পিতাকে নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করেছিল খুনিরা। এরপর অবৈধভাবে জিয়া, এরশাদ ক্ষমতায় আসে। তারা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারেনি।

প্রধানমমন্ত্রী বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ উন্নয়নে দেশের সোনালী সময় ছিল। দুর্ভাগ্য, চক্রান্ত করে ২০০১ সালে আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। ২০০১ থেকে ২০০৬ ছিল মানুষের সবচেয়ে বড় অন্ধকার যুগ।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। বিএনপির দুঃশাসনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে আমাদের ক্ষমতায় রেখেছে। আজ ২০২৩ সাল, আমরা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে। আজকে দুর্ভিক্ষ নেই, মঙ্গা নেই। মানুষ এখন তিন বেলা খেতে পারছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিনামূলে শিশুদের বই বিতরণ করছি। অসহায়দের ভাতা দিচ্ছি। আজকে ১০ কোটি মানুষ উপকারভোগী। আমরা বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে শিল্প কলকারখানা চালিয়ে আসছি। ১০ টাকায় কৃষকরা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। ১ কোটি ২ লাখ কৃষক অ্যাকাউন্ট খুলে ভর্তুকির টাকা পাচ্ছে। বরিশাল এক সময় ছিল শস্য ভান্ডার। আবার আমরা সেই ভান্ডারের সুনাম ফেরাতে সাইলো নির্মাণ করছি।

এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরিশালের নির্বাচনী জনসভাস্থল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিকেল ৩টায় পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ।

শেখ হাসিনার জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আসেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা। নানা রঙের শাড়ি, রঙিন ক্যাপ-পোশাক পরে মাঠে আসেন দলীয় সমর্থকেরা। সঙ্গে ছিল ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সমাবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। দুপুর পৌনে ১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে জনসভা শুরু হয়।