বাড়বে শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা, কয়েক জেলায় স্কুল বন্ধ

খুলনা, যশোর, বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গতকালের বৃষ্টিতে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে। রাজধানীতেও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

ছবি - সংগৃহীত

মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে পুরো রংপুর বিভাগসহ প্রায় ১০টি জেলায়। সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছিল যে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গেলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করা হবে।

এখন পর্যন্ত, মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে কিছু জেলায় স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় শুধু মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। কিছু শিক্ষার্থী স্কুলে পৌঁছে বন্ধ ঘোষণার কথা জানতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শৈত্যপ্রবাহের আওতায় থাকা এলাকাগুলো আজ শুক্রবার আরও বাড়তে পারে। এছাড়া দেশের পাঁচটি বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রাতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও বাড়ার সম্ভাবনা নেই, অর্থাৎ শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েকদিন থাকবে।

দক্ষিণ-পূর্বের বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে যশোরে। চুয়াডাঙ্গা ও সাতক্ষীরায় যথাক্রমে ২০ মিলিমিটার ও ১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে বৃষ্টি মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে, বিশেষ করে শিশুদের জন্য। বুধবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গায় মাধ্যমিক পর্যায়ের সব স্কুলের একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। যদিও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি সম্পর্কে কোনও ঘোষণা ছিল না, তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি বন্ধ করার ঘোষণার পরে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরের মল্লিকপাড়া এলাকার পুরাতন জেএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে তারা কেউই বিদ্যালয়ে আসেননি। বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের মোট ১৮০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। শৈত্যপ্রবাহে কুড়িগ্রামেও স্কুল বন্ধ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা ১০ দিন ধরে জেলায় শৈত্যপ্রবাহ চলছে। দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওঠানামা করছে। জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে। তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ে এখনও কোনো ঘোষণা আসেনি।

এ বিষয়ে দিনাজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিইও) রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিদ্যালয়গুলো এখনো বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। তবে রোববারও পরিস্থিতি একই থাকলে আমরা ক্লাস স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

পঞ্চগড়ে, বৃহস্পতিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তবে ঘোষণায় দেরি হওয়ায় বেশিরভাগ স্কুল সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট থেকে ১১টা ১৫ মিনিটের মধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

রংপুর বিভাগের সবকটি জেলা, কিশোরগঞ্জ ও নওগাঁর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। বিএমডি আবহাওয়াবিদ মোঃ মনোয়ার হোসেন জানান, শুক্রবার শৈত্যপ্রবাহ আরও নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। অন্যান্য স্থানে অস্থায়ীভাবে মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

শুক্রবার সকালে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে, যা দুপুর পর্যন্ত থাকতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, কুয়াশার কারণে আকাশপথ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ এবং সড়কপথের মাধ্যমে যোগাযোগ সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, আজ রাতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এতে শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা আরও তীব্র হবে। মঙ্গলবার পর্যন্ত আবহাওয়া একই রকম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও সারা মাস ঠান্ডা থাকবে।”