ইইউ: কাজে আসছে না ইসরায়েলি প্ল্যান, দরকার শান্তি আলোচনা

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে ধ্বংস করার জন্য ইসরায়েলের কোনো পরিকল্পনা কাজ করছে না। তাই এখন দরকার শান্তি আলোচনা। ইসরায়েল বিরোধিতা করলেও ইইউকে অবশ্যই ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান’ সমাধানের পথে এগিয়ে যেতে হবে।

জোসেপ বোরেল

সোমবার (২২ জানুয়ারি) ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মাসিক সমাবেশে জোসেপ বোরেল এসব মন্তব্য করেন। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে সৌদি আরব, মিশর ও জর্ডানের প্রতিনিধি এবং আরব লিগের মহাসচিব উপস্থিত ছিলেন। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেন। আলোচনায় ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলা এবং গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।

এর আগের দিন রোববার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এটি ইসরায়েলের জন্য ‘অস্তিত্বগত বিপদ’ তৈরি করবে। তাই ইসরায়েল জর্ডান নদীর পশ্চিমে গাজা এবং ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীর অন্তর্ভুক্ত সমস্ত অঞ্চলের ওপর পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে জোর দেবে।

ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা

ইসরায়েলের এমন অবস্থানের ব্যাপারে বোরেল বলেন, তারা যেভাবে হামাসকে ধ্বংস করতে চাইছে, সেটা আসলে কাজ করছে না। এভাবে কাজ হওয়ারও নয়। তারা কি চাইছে সব ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে চলে যাবে, নইলে তাদের সবাইকে হত্যা করা হবে? এভাবে আসলে হামাসকে ধ্বংস করা যাবে না। বরং তারা বংশ পরম্পরায় ঘৃণার সিলমোহর দিয়ে দিচ্ছে।

বোরেল আরও বলেন, তিনি এমন একটি প্রক্রিয়া তৈরি করতে চান, যা ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সহাবস্থানও নিশ্চিত করবে। এ সংক্রান্ত আলোচনা আগেও অনেকবার শুরু হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর কার্যকর হয়নি।

১৯৯০ এর দশকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি শান্তি আলোচনার কথা উল্লেখ করে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, আমরা ৩০ বছরেরও বেশি বছর ধরে এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত আছি। তারপরও এর পরিণতি কী? আমরা কি একটি উগ্র বর্ণবাদী এজেন্ডাকে ভবিষ্যত নির্ধারণের অনুমতি দেবো নাকি শান্তির প্রত্যাশায় দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাব?

উল্লেখ্য, তিন মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে পুরো এলাকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ২৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, চলমান এ লড়াই আরও অনেক মাস ধরে চলতে পারে। গাজা থেকে হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তারা এ হামলা অব্যাহত রাখবে।