জানতে চাইলেন ড. ইউনূস, কে মামলা করেছে, সরকার নাকি শ্রমিকরা

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুস আজ রোববার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে জিজ্ঞাসা করেন, শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, তা কে দায়ের করেছে? তিনি বলেন, ‘সরকারের সব স্তর থেকেই বারবার বলা হচ্ছে যে, সরকার এই মামলা দায়ের করেনি। আপনারাই (সাংবাদিক) সাক্ষী, কিন্তু আপনারা কিছু বলছেন না। সরকার না, নাকি শ্রমিকরা এটা দায়ের করেছে? আমাকে এই উত্তরটা দিন।’

ছবি - সংগৃহীত

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাজার বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনুস এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সরকারি সংস্থা। আপনারা (সাংবাদিক) বলছেন, কোনো শ্রমিক মামলা করেনি। এটা মিথ্যা।’

এর আগে ড. ইউনুস সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং গ্রামীণ ব্যাংক, সামাজিক ব্যবসাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে তাদের স্মরণ করিয়ে দেন।

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুস আজ সকালে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ডিআইএফই দায়ের করা মামলায় রায়ের চ্যালেঞ্জ করেন।

শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এমএ আউয়াল ড. ইউনুসসহ চারজনের আপিল গ্রহণ করেন এবং তাদের স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।

ড. ইউনুসের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ট্রাইব্যুনাল তাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে এবং ৩ মার্চ তারিখ ধার্য করেছে।

ড. ইউনুস ও আরও তিনজন আজ সকাল ১০:৪৫ মিনিটের দিকে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আসেন এবং ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের রায়ের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপিল দায়ের করেন। একইসঙ্গে তারা জামিন আবেদন করেন। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত ১ জানুয়ারি এই মামলায় চারজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। একইসঙ্গে আদালত তাদের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

অন্য তিনজন দণ্ডিত ব্যক্তি হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। গত বছরের ৬ জুন অভিযোগ গঠন করা হয়। ২২ আগস্ট সাক্ষ্য রেকর্ড করা শুরু হয়ে তা শেষ হয় ৯ নভেম্বর। গত ২৪ ডিসেম্বর মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, শ্রম আইন ২০০৬ এবং শ্রম বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের নিয়োগ তাদের শিক্ষানবিশকাল পূর্ণ হওয়ার পরেও স্থায়ী করা হয়নি।

এটি আরও বলা হয়েছিল যে সংস্থায় কর্মরত কর্মী বা কর্মচারীদের বার্ষিক ছুটি, ছুটির নগদ অর্থ এবং ছুটির বিপরীতে নগদ মঞ্জুর করা হয়নি। গ্রামীণ টেলিকমে কর্মী অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া শ্রম কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইনের অধীনে গঠিত তহবিলে মুনাফার ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ জমা করা হয়নি।