আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারক, ইয়েমেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী

ইয়েমেনের প্রেসিডেন্সিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিল সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারককে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইয়েমেনের মন্ত্রিপরিষদ অফিস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বিবৃতির মাধ্যমে এ খবর জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইয়েমেনের সাবেক রাষ্ট্রদূত বিন মুবারককে হুতি বিদ্রোহীদের কট্টর প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা হয়। খবর রয়টার্স ও হিন্দুস্তানটাইমস।

আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারক

মন্ত্রিপরিষদের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মঈন আব্দুল মালিক সাইদ প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বাধীন কাউন্সিলে চেয়ারম্যানের উপদেষ্টার ভূমিকা নেবেন।

দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলেও আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারক আলোচনায় আসেন ২০১৫ সালে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদ-রাব্বু মনসুর হাদির সঙ্গে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ক্ষমতার লড়াইয়ের সময় তিনি প্রেসিডেন্টের প্রধান স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই সময়ে তিনি হুতি বিদ্রোহীদের হাতে অপহৃত হলে একটি গোষ্ঠীর কাছে রাতারাতি তার জনপ্রিয়তা অনেকখানি বেড়ে যায়।

আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারক

তবে ওই ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট গার্ডদের সঙ্গে হুতিদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয় এবং প্রেসিডেন্ট আবদ-রাব্বু মনসুর হাদি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এদিকে আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারক ২০২০ সাল থেকে ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এর আগে ২০১৮ সালে বিন মুবারক জাতিসংঘে দেশটির দূত হিসেবে নিযুক্ত হন।

ফিলিস্তিনে চলমান লড়াইয়ে গাজার সমর্থনে হুতিরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলের স্বার্থসংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। পেন্টাগনের হিসেব মতে, ১৯ নভেম্বর থেকে হুতিরা ৩০টিরও বেশি জাহাজে আক্রমণ করেছে। এর জবাবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইয়েমেনে যৌথ হামলা পরিচালনা করছে। এমন সময়ে ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী পদে পরিবর্তন আনা হলো। তবে এ পরিবর্তনের কোনো কারণ জানায়নি ইয়েমেনের প্রেসিডেন্সিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিল।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নাভান্তি গবেষণা গোষ্ঠীর ইয়েমেন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ আল-বাশা বলেছেন, বিন মুবারককে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের স্থপতিদের একজন হিসাবে দেখা হয়। ২০১৫ সালে বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করে নিয়েছিল। সে সময় সৌদি নেতৃত্বাধীন জোনটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে সমর্থন করার জন্য হুতিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল।

এছাড়া সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে বিন মুবারক হুতিদের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন বিন মুবারক। ফলে ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নিয়োগকে হুতিদের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানোর সম্ভাবনা একেবারেই নেই। বরং তার নিয়োগ হুতি ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের মধ্যকার উত্তেজনাকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।