টানা তিন মাস বাড়ল এলপিজির দাম, ১২ কেজির সিলিন্ডার এখন ১৪৮২ টাকা

বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম বাড়েনি, ডলারের দামও এখন কিছুটা কম। এরইমধ্যে দেশে ভোক্তাপর্যায়ে এলপিজির দাম ফের বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সংস্থাটি ১২ কেজির সিলিন্ডারে ৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে ১৪৮২ টাকা। এ নিয়ে নতুন বছরে টানা তিনমাসই বাড়ানো হলো এলপিজির দাম।

নতুন বছরে টানা তিন মাসই বাড়ল এলপিজির দাম

বিইআরসি কার্যালয়ে আজ রবিবার (৩ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে এলপিজির নতুন দর ঘোষণা করেন বিইআরসির চেয়ারম্যান নূরুল আমিন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, চলতি মার্চ মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৮২ টাকা। নতুন দর রবিবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকেই কার্যকর হবে।

এলপিজির ১২ কেজির সিলিন্ডার মূলত গৃহস্থালির কাজে বেশি ব্যবহৃত হয়।

তথ্য অনুযায়ী, এবার ১২ কেজির সিলিন্ডারে ৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে ১২ কেজির দাম ১৪৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তখন বাড়ানো হয়েছিল ৪১ টাকা। তার আগের মাস জানুয়ারিতে ১২ কেজির দাম ২৯ টাকা বাড়িয়ে ১৪৩৩ টাকা নির্ধারণ করেছিল বিইআরসি। ডিসেম্বরে দাম ছিল ১৪০৪ টাকা।

২০২১ সালের এপ্রিল থেকে প্রতিমাসেই একবার এলপিজির দাম সমন্বয় করে আসছে বিইআরসি। এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন, যা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতিমাসে এলপিজির দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের জাতীয় তেল-গ্যাস কোম্পানি আরামকো। ওই মূল্যকে সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে অভিহিত করা হয়। সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশের বাজারে এলপিজির দাম সমন্বয় করে থাকে বিইআরসি।

বিশ্ববাজারে সম্প্রতি এলপিজির দাম বাড়েনি, ডলারের দামও এখন কিছুটা কম; তারপরও কেন দাম বাড়ানো হলো- এ বিষয়ে বিইআরসির বক্তব্য, পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে এলপিজির দাম বেড়েছে। এক্ষেত্রে আমদানিকারক কোম্পানিগুলোর চালান (ইনভয়েস) মূল্য গড় করার মাধ্যমে পুরো মাসের জন্য ডলারের মূল্য হিসাব করে এলপিজির দাম সমন্বয় করে থাকে বিইআরসি।

বিইআরসির তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারিখাতে এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাটসহ) প্রতি কেজি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৩ টাকা ৫২ পয়সা, যা আগের মাসে ছিল ১২২ টাকা ৮৬ পয়সা। এই হিসাব ধরেই বিভিন্ন আকারের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

বাজারে সাড়ে ৫ কেজি থেকে ৪৫ কেজি পর্যন্ত বিভিন্ন আকারের সিলিন্ডার রয়েছে। গৃহস্থালি রান্নার পাশাপাশি হোটেল-রেস্তোরাঁ, যানবাহন, ছোট-বড় শিল্পকারখানায় এলপিজির ব্যবহার হচ্ছে। এই বাজারের ৯৯ শতাংশ বেসরকারি খাতের দখলে রয়েছে।

অন্যদিকে সরকারি কোম্পানির সরবরাহকৃত এলপিজির দাম ৫৯১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৯০ করা হয়েছে। অন্যদিকে গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) দাম প্রতি লিটার ৬৮ টাকা ৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা এত দিন ৬৭ টাকা ৬৮ পয়সা ছিল।