ফিলিস্তিনের গাজাকে দুই ভাগে বিভক্ত করল ইসরায়েল!

পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। এর মধ্যেই গাজায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আন্তর্জাতিক চাপের কারণে কিছুটা ধামাচাপা পড়লেও নিজেদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই এগিয়ে চলছে ইসরায়েল। সম্প্রতি এক স্যাটেলাইট চিত্রে সেটিই পরিষ্কার হয়েছে। ওই চিত্রে দেখা যায়, অবরুদ্ধ গাজার মাঝ বরাবর নতুন একটি রাস্তা তৈরি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। খবর বিবিসি।

হাইওয়ে ৭৪৯

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, ইসরায়েল তাদের সীমানায় বিশাল দেওয়াল তুলে যেমনিভাবে গাজাবাসীকে ঠেকিয়ে রাখে, রাস্তাটিকের পরবর্তী সময়ে এমন কোনো কাজে ব্যবহার করবে। যুদ্ধ শেষ হলেও যেন ফিলিস্তিনিরা গাজার উত্তরাঞ্চলে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে না পারে সেজন্যই ইসরায়েল এমন পরিকল্পনা করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন রাস্তাটি নাহাল অজ কিবুৎজ এলাকার ইসরায়েল-গাজার সীমান্ত প্রাচীর থেকে শুরু হয়েছে। পুরো গাজাকে দুইভাগ করে দিয়ে রাস্তাটি পশ্চিমে উপকূলীয় এলাকায় গিয়ে শেষ হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তারা কেবল জানিয়েছে, নিজেদের পণ্য ও ত্রাণ পরিবহনের জন্যই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে। ইসরায়েলি একটি চ্যানেলে রাস্তাটিকে ‘হাইওয়ে ৭৪৯’ নামে অভিহিত করেছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অবকাঠামোটি নির্মাণ করেছে, তাই এটি স্থায়ী অবকাঠামো রূপ লাভ করতে পারে।

ইসরায়েলের একটি সীমানাপ্রাচীর

স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মিত এই রাস্তার দৈর্ঘ্য পাঁচ কিলোমিটারের বেশি। গত বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে এর কাজ শুরু হয়েছিল। এ বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ সময়ের মধ্যেই রাস্তাটির বেশিরভাগ অংশ সম্পন্ন হয়েছে। রাস্তাটি তৈরি করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী অসংখ্য ঘরবাড়ি এমনকি বহুতল ভবনও গুড়িয়ে দিয়েছে।

ইসরায়েলের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সাবেক প্রধান জেনারেল জ্যাকব নেগেল রাস্তাটির প্রসঙ্গে বলেন, রাস্তাটির মাধ্যমে ইসরায়েলের জন্য গাজায় ঢোকা-বের হওয়ায় আগের তুলনায় অনেক বেশি সুবিধা হবে। একই সঙ্গে গাজার প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তাসহ সব ধরনের দায়িত্ব পালনেও ইসরায়েলের পক্ষে সহায়ক হবে। তিনি রাস্তাটিকে গাজার ‘উত্তরাঞ্চলকে দক্ষিণাঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্নকারী রাস্তা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো খালিদ এলগিন্ডি বলেন, রাস্তাটির নির্মাণ দেখে মনে হচ্ছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী অনির্দিষ্ট সময় ধরে গাজায় অবস্থানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে।