আপনি পড়ছেন

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ৫ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের যুদ্ধ চলছে। এছাড়া ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমেও প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনিদের হেনস্থা করছে ইসরায়েলি বাহিনী এবং ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা। এরই মধ্যে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র এই মাসটিকে বরণ করে নেয়। কিন্তু এবার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকাসহ পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমের ফিলিস্তিনিরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

palestinians prepare for ramadanছবি - সংগৃহীত

আর মাত্র একদিন পরেই রমজান মাস শুরু হবে অথচ গাজার যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য এখনও ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে কোনো চুক্তি হয়নি। যুদ্ধবিরতির আলোচনাও আপাতত স্থগিত রয়েছে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত এই অঞ্চলে বর্তমানে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। গাজাবাসী দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে আছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ। 

অপরদিকে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের পুরাতন শহরের সরু রাস্তার চারপাশে হাজার হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখানেই ইসলামের অন্যতম পবিত্র মসজিদ আল-আকসার অবস্থান। রমজান মাসে এই মসজিদে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি মুসল্লি নামাজ আদায়ের জন্য হাজির হবেন। ইসরায়েলি পুলিশ এবং চরমপন্থী ইহুদিরা বিগত বছরগুলোতে পবিত্র রমজান মাসে আল-আকসায় ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর নিয়মিত হামলা করেছে।

গত মাসে ইসরায়েলের চরম ডানপন্থী নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন গভির জানিয়েছিলেন, তিনি আল আকসায় মুসল্লিদের প্রবেশের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে চান। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, গত বছরের মতই এবারও নির্দিষ্ট সংখ্যক মুসল্লি আল-আকসায় নামাজ আদায় করতে পারবে।

এদিকে আল-আকসার তত্ত্বাবধানকারী জেরুজালেম ওয়াকফের মহাপরিচালক আজাম আল-খতিব বলেছেন, ‘এটি আমাদের মসজিদ এবং আমাদের অবশ্যই এর দেখাশোনা করতে হবে। আমাদের অবশ্যই এই মসজিদে মুসলমানদের উপস্থিতি রক্ষা করতে হবে যাতে তারা শান্তিপূর্ণভাবে এবং নিরাপদে বিপুল সংখ্যায় এখানে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে।' 

পূর্ববর্তী বছরগুলোতে রমজান মাস উপলক্ষ্যে জেরুজালেমের ওল্ড সিটির চারপাশে এবং পশ্চিম তীরের শহরগুলোতে সাজসজ্জা করা হয়েছিল। তবে এবার এটির ব্যতিক্রম দেখা গেছে। ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে সংঘর্ষ বেড়ে গিয়েছে। ইসরায়েলি এবং ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় এই অঞ্চলে প্রায় ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ফলে এবার মূলত শোকের মধ্য দিয়েই সমগ্র ফিলিস্তিন ভূখন্ডের মুসলমানরা রমজান মাসকে বরণ করতে যাচ্ছে। 

জেরুজালেমের ওল্ড সিটির স্থানীয় নেতা আম্মার সিদার বলেছেন, ‘আমরা এই বছর জেরুজালেমের পুরানো শহর আমাদের শিশুদের, প্রবীণদের এবং শহীদদের রক্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে সজ্জিত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।' 

ইসরায়েলি পুলিশ দাবি করেছে, তারা একটি শান্তিপূর্ণ রমজান নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কগুলোতে উস্কানিমূলক এবং বিকৃত তথ্য দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়া সন্ত্রাসবাদে উস্কানি দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যেই সন্দেহভাজন ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রতি বছর রমজান মাস এলেই আল-আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ইসরায়েলি বাহিনী। গত মাসে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া রমজান মাসের প্রথম দিনে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের আল-আকসা মসজিদ অভিমুখে পদযাত্রা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু ছিল।

সূত্র: রয়টার্স 

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.