নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ নাটোরের এমপির, যেভাবেই হোক তোলার ঘোষণা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ (বাগাতিপাড়া-লালপুর) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন মো. আবুল কালাম আজাদ। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে জিতে আসতে এই আওয়ামী লীগ নেতার খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এত টাকা খরচের কথা নিজেই স্বীকার করে এই এমপি ঘোষণা দিয়েছেন, যেভাবেই হোক অন্যায় করে হলেও খরচের টাকা তুলবেন তিনি। তার এমন বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশজুড়ে।

লালপুরে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এমপি আবুল কালাম আজাদ

নাটোর-১ আসনের এমপি আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্বাচনে আমার ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এই টাকা আমি তুলব, যেভাবেই হোক তুলব। এটুকু অন্যায় আমি করবোই। এরপর আর করব না।

লালপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে এই কথা বলেন এমপি আজাদ। পরদিন তার এই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে গণমাধ্যমে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনী আইনের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুসারে, সংসদ নির্বাচনে  একজন প্রার্থী নির্বাচনী ব্যয় হিসেবে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা খরচ করতে পারবেন। অথচ এই এমপি নির্ধারিত সীমার চেয়েও বেশি খরচ করেছেন এক কোটি টাকা।

অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এমপি আজাদ আরও বলেন, ইচ্ছা করলে এক কোটি টাকা দিয়ে আমি গাড়ি কিনতে পারতাম। কিন্তু যেহেতু আমার টাকা নাই, ২৭ লাখ টাকা দিয়ে ট্যাক্স-ফ্রি গাড়ি কিনেছি।

আজাদ বলেন, এবার কিনব, ওই টাকা দিয়েই গাড়ি কিনব আমি। আমি ওই টাকা তুলে নেবো। শুধু এই ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা তুলব। যেভাবেই হোক, এটুক অন্যায় আমি করবোই, আর কিছু করবো না।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলার ইউএনও শারমিন আখতার। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজন সংসদ সদস্য হয়ে সবার সামনে প্রকাশ্যে কেন তিনি এমন কথা বললেন, সেটি আমার বোধগম্য নয়। তার এমন বক্তব্যে বিব্রত হয়েছি আমি নিজেও।

বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি এমন কিছু নয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় কিছুটা মজা করেই কথাটা বলেছি আমি। সেটি সিরিয়াস কোনো কথা নয়, কথার কথা।

৭ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মো. আবুল কালাম আজাদ।

আজাদ ঈগল প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত (নৌকা) প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগে সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম বকুলকে প্রায় দুই হাজার ভোটের পরাজিত করেছেন।