ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান!

ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা শুরু করেছে ইরান। শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে এই হামলা শুরু হয় বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরানের এটাই প্রথম সরাসরি হামলা। খবর বিবিসি, রয়টার্স, হারেৎজ, টাইমস অব ইসরায়েল।

ইরানের ড্রোন হামলা

ইরান ড্রোন অ্যাটাক শুরুর পরপরই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি এক সংবাদ সম্মেলনে হামলার কথা নিশ্চিত করে জানান, ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ড্রোনগুলোর ওপর নজর রাখছে। এগুলো ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে এগুলোকে প্রতিহত করতে জিপিএস প্রযুক্তি বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

হাগারি বলেন, ড্রোনগুলো ইসরায়েলি আকাশসীমায় প্রবেশ করলেই কেবল সাইরেন বাজানো হবে। সেনাবাহিনী যত দ্রুত সম্ভব ড্রোনগুলো প্রতিহত করার চেষ্টা করবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইরানের ড্রোন ইসরায়েলে পৌঁছানোর পর তেল আবিব, জেরুজালেমসহ পুরো ইসরায়েলে সাইরেনের আওয়াজ শোনা গেছে। পাশাপাশি ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের বাহিনী ড্রোন ঠেকাতে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।

ইরান ইসরায়েল

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রই প্রথমে ইরানি ড্রোন হামলার বিষয়ে ইসরায়েলকে অবহিত করে। ইরানি ড্রোনগুলোর প্রতিটি ২০ কেজি করে বিস্ফোরক বহন করছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলের আকাশসীমার বাইরেই তারা বেশিরভাগ ড্রোনকে ভূপাতিত করতে চান। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ তাদেরকে সহযোগিতা করবে।

এদিকে ইরান জানিয়েছে, দামেস্কে তাদের কনস্যুলেট ভবনে হামলা এবং শীর্ষস্থানীয় সামরিক কমান্ডার হত্যার প্রতিশোধ নিতে তারা এ হামলা চালিয়েছে। গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের ইরানি কনস্যুলেট ভবনে সন্দেহভাজন ইসরায়েলি হামলায় ইরানের একজন শীর্ষস্থানীয় কমান্ডারসহ সাতজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এর পর থেকেই ইরান এ হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে আসছিল।

ইরানের এলিট গ্রুপ ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে ইসরায়েলে হামলা শুরুর কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ‘ট্রু প্রোমিজ’ নামে অভিযানের আওতায় এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে। সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেট ভবনে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তারা এই আক্রমণ চালাচ্ছে। প্রথম দফায় কয়েক ডজন ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করবে। ড্রোনগুলো ইরাকের আকাশ হয়ে ইসরায়েলের দিকে যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইসরায়েলের সুরক্ষায় তিনি সবসময় পাশে আছেন। ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তিনি নির্ধারিত সফর সূচি বাতিল করে ওয়াশিংটন ফিরে গেছেন। ইসরায়েলে ইরানি হামলা নিয়ে তিনি হোয়াইট হাউসে জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ইসরায়েলগামী দুটি এবং থাইল্যান্ড থেকে ইসরায়েলগামী দুটি বিমান ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।