ঢাকায় কেন আসছেন ডোনাল্ড লু

দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আগামী ১৪ মে ঢাকায় আসছেন। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পূর্ব ও পরবর্তী ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে যেটুকু দূরত্ব তৈরি হয়েছে, এই সফরের মধ্যে দিয়ে সেটি নিরসন এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কের পথরেখা নিয়ে আলোচনার জন্যই আসছেন লু। আর সেই উদ্দেশ্যে দুইদিনের সফরে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে একাধিক বৈঠক ও মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন মার্কিন সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আগামী ১৪ মে ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো স্বীকার করেছে, ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মতপার্থক্যের বিষয়টি কারও অজানা নয়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ইস্যুতে ভোটের আগের বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতিও জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

শুধু তাই নয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনসহ দেশটির প্রশাসন পর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলে গেছে বরাবরই। এমনকি ৭ জানুয়ারি ভোটের পরও হতাশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেই মতপার্থক্যগত দূরত্বের কিছুটা প্রশমন ঘটেছে বলেই প্রতীয়মান। ঢাকায় ডোনাল্ড লুর আসন্ন সফর তারই প্রমাণ এবং এ সফর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনপরবর্তী উচ্চপর্যায়ের প্রথম সফর। এর আগে গত বছর জানুয়ারিতে ঢাকায় এসেছিলেন ডোনাল্ড লু।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ডোনাল্ড লু। পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে করবেন সৌজন্য সাক্ষাৎ। এছাড়া নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও লুর মতবিনিময় করার কথা।

ডোনাল্ড লুর সফর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক চিঠিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবনা স্পষ্ট করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বাইডেনের ওই চিঠির শুরুতে ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারত্বের পরবর্তী পর্ব’ কথাটি লেখা ছিল, যা থেকে স্পষ্ট বাংলাদেশের সঙ্গে এখন সম্পর্ক এগিয়ে নিতে মনোযোগী যুক্তরাষ্ট্র। আর অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারভিত্তিতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তাসহ রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যার মতো বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সামনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই সময়ে উল্লিখিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি ভবিষ্যত সম্পর্ক বির্নিমাণে যুক্তরাষ্ট্র কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবে, সেই ধারণা মিলবে ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফরে।