পুতিনের ভিয়েতনাম সফর: ঐতিহাসিক সম্পর্কের ছায়ায় নতুন সমীকরণ
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভিয়েতনাম সফর ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে আগ্রহ তুঙ্গে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের পর বৃহস্পতিবার হ্যানয়ে ভিয়েতনামের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন তিনি। এ সফরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্কের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও সম্ভাব্য আলোচ্য বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেছে সংবাদমাদ্যম এএফপি। এই প্রতিবদেনে তা তুলে ধরা হলো।
পুতিন কেন হ্যানয় গেলেন? ভিয়েতনাম ও রাশিয়ার মধ্যে ১৯৫০-এর দশক থেকে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তবে ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের কাছ থেকে যে ‘পূর্ণ সমর্থন’ পেয়েছেন, হ্যানয় থেকে তা পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই উৎপাদনশীল দেশটি বহু বছর ধরে যেকোনো বড় শক্তির সঙ্গে খুব বেশি ঘনিষ্ঠ হওয়া এড়িয়ে চলে। তাদের নীতি হলো নমনীয়তার মাধ্যমে শক্তি অর্জনের কূটনীতি।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের শি জিনপিং উভয়েই সম্পর্ক জোরদার করতে ভিয়েতনাম সফর করেছেন। পুতিনকে স্বাগত জানানো হয়েছে, যদিও নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন এবং বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের কাছে তিনি অপছন্দের।
পুতিনের এ সফর নিয়ে আন্তর্জাতিক সংকট গোষ্ঠীর এশিয়া কর্মসূচির উপ-পরিচালক হুং লে থু বলেন, ‘হ্যানয়ের বহুমুখী কৌশল কতদূর যেতে পারে এবং অন্যান্য প্রধান শক্তি তাদের কতটা গ্রহণ করে, তার পরীক্ষা।’
পুতিনের যে আন্তর্জাতিক সমর্থক রয়েছে, এই সফর তা দেখানোর একটি সুযোগ হতে পারে বলেও মনে করেন থু।
ঐতিহাসিক সম্পর্কের গভীরতা
ভিয়েতনামের হো চি মিন সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে ১৯৫০ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী প্রথম দেশগুলোর মধ্যে ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন।
১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০,০০০ ভিয়েতনামি সোভিয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ক্রেমলিনের সরবরাহ করা অস্ত্রের ওপর ভিয়েতনামের পরপর সরকারগুলো কয়েক দশক ধরে ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন তার সহযোগী ভিয়েতনামের কমিউনিস্টদের জেট যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, হেলিকপ্টার ও ট্যাঙ্কের পাশাপাশি প্রায় ১১,০০০ সৈন্য সরবরাহ করেছিল, ভিয়েতনামের সেনা সংবাদপত্রের তথ্য অনুযায়ী।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরও এই সম্পর্ক অটুট ছিল। স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ভিয়েতনামের অস্ত্র আমদানির ৮০ শতাংশেরও বেশি এসেছে রাশিয়া থেকে।
২০০২ সাল পর্যন্ত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে রাশিয়া ভিয়েতনামের কৌশলগত ক্যাম র্যাঁহ উপসাগরকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছে।
২০১২ সালে দুই দেশের সম্পর্ককে একটি ‘ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ -এ উন্নীত করা হয়, যা হ্যানয়ের সর্বোচ্চ স্তরের সম্পর্ক। অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ভিয়েতনামের একই স্তরের সম্পর্ক রয়েছে।
কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে?
রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, আলোচনায় বাণিজ্য, শিক্ষা ও জ্বালানি ইস্যু, বিশেষ করে মস্কো কীভাবে ভিয়েতনামকে পরিচ্ছন্ন শক্তিতে রূপান্তর করতে সহায়তা করতে পারে, সে বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করা হবে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, অস্ত্র রপ্তানি, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মস্কোর প্রতিশ্রুত সমর্থনে হ্যানয়ের উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর (ব্রিকস) গোষ্ঠীতে যোগদানের বিষয়টিও আলোচনায় থাকবে।
ইউক্রেন আক্রমণের জেরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়া থেকে ভিয়েতনামের অস্ত্র আমদানি কমেছে।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির অধ্যাপক কার্ল থায়ার বলেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ে না গিয়ে ব্যবসা করার উপায় নিয়ে উভয় পক্ষ সম্ভবত অন্দর আলোচনায় বসবে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.