কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ: নিহত অন্তত ৫ জন, আহত শতাধিক

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে অন্তত পাঁচজন নিহত এবং অসংখ্য আহত হয়েছেন। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে ঢাকায় একজন, চট্টগ্রামে তিনজন এবং রংপুরে একজন রয়েছেন।

ছবি - সংগৃহীত

রাজধানীর ঢাকা কলেজ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী এক যুবক নিহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এক পথচারী গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

পথচারীর বরাত দিয়ে বাচ্চু মিয়া জানান, ঢাকা কলেজ এলাকা থেকে তিনি ওই যুবককে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, মৃত যুবকের মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এছাড়াও আহত আরও অনেককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনা হয়েছে।

চট্টগ্রামে বিকেলে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে চট্টগ্রাম কলেজের এক ছাত্রসহ তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন, চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ওয়াসিম আক্রম (২৪) এবং আসবাবপত্রের দোকানের কর্মী মো. ফারুক (২৫)। অপরজনের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বিকেল ৩টার দিকে নগরীর ষোলশহর এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়।

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত এবং ১৬ জন আহত হন।

নিহত আবু সাঈদ (২৫) পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী ইসরারুল হক জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আবু সাঈদকে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষে আহত অন্য ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে বিকেল আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। এর আগে, ৫ জুন হাইকোর্টের এক রায়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা হয়।