সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাজধানীর ২৯ থানায় কার্যক্রম শুরু

সাম্প্রতিক আন্দোলনের জেরে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলার শিকার হওয়া রাজধানীর থানাগুলোতে ধীরে ধীরে ফিরছে স্বাভাবিকতা। সেনাবাহিনীর সহায়তায় শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে ২৯টি থানায় পুলিশি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

তেজগাঁও থানায় সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদস্য ও পুলিশ সদস্য

গত ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীদের হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং পুলিশ সদস্যদের প্রাণহানির পর থেকে অরক্ষিত ছিল বেশ কয়েকটি থানা। আতঙ্কে থানা ছেড়ে যান পুলিশ সদস্যরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

শুক্রবার সকাল ১১টায় তেজগাঁও থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা জানান, প্রাথমিকভাবে ২৯টি থানায় পুলিশি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় থাকছেন সেনাসদস্যরা।

সেনাবাহিনীর ২৫ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের কোম্পানি কমান্ডার শাখাওয়াত খন্দকার বলেন, ‘৫ আগস্ট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। দুষ্কৃতকারীরা সাধারণ মানুষের বেশে মিশে গিয়ে পুলিশদের ওপর হামলা চালায়। আমরা সিদ্ধান্ত নিই, থানা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, এটি রক্ষা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু। তাদের সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে। এছাড়া থানায় থাকা অস্ত্র যদি দুষ্কৃতকারীদের হাতে চলে যেত, তাহলে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’

কমান্ডার শাখাওয়াত জানান, পুলিশ বাহিনী সংস্কারের বিষয়ে ছাত্র-শিক্ষক, ব্যবসায়ী, স্কাউট, বিএনসিসি এবং আনসার বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সভা করা হয়েছে।

তেজগাঁও থানার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা অনন্য। জনগণের জানমাল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তারা।’

সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও থানার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, সেনা সদস্যরা যেভাবে আমাদের পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন, মানুষের জানমাল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাতে তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তাদের সহায়তায় আজ আমরা পুলিশের সব কার্যক্রম শুরু করেছি। সবার প্রতি অনুরোধ, আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সব ধরনের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত।

তিনি বলেন, আপাতত তেজগাঁও বিভাগে ৬টি থানার মধ্যে ৩টি থানার কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হয়েছে। এরই মধ্যে থানাগুলোতে কর্মরত অনেক পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন। বাকিরাও আসছেন। আমরা আশা করছি, দ্রুতই আমাদের সব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগ দেবেন।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা সবাই এখানে একসঙ্গে কাজ করেছি। আজ অনেক পুলিশ সদস্য আর আমাদের কাছে নেই। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জন্য আমরা অনেক ভুল করেছি। জনগণের সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আমরা জনগণের সেবক। তাই আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সব ধরনের সেবার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।