আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ভারসাম্য চায় অন্তর্বর্তী সরকার

নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রাক্কালে বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা প্রয়োজন।

মো. তৌহিদ হোসেন

শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। বড় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।’

তৌহিদ হোসেন উল্লেখ করেন, এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রাথমিক লক্ষ্য অর্জিত হলে অন্যান্য বিষয়গুলো ঠিক পথে ফিরে আসবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং অন্যান্য উপদেষ্টারা শুক্রবার সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তারা ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।

নোবেল বিজয়ী এবং বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে নতুন যাত্রার আশা জাগে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

যুক্তরাষ্ট্র: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে পুনর্ব্যক্ত করেছে, যাতে বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যায়।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ): নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার এবং এই গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরকে সমর্থন করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে ইইউ। তাদের মতে, এই রূপান্তর একটি শান্তিপূর্ণ এবং সর্বজনীন প্রক্রিয়ার অংশ হওয়া উচিত, যা সুশাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হবে।

ভারত: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসা এবং হিন্দুসহ সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আশা প্রকাশ করেছেন।

চীন: বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন এবং তাকে স্বাগত জানিয়েছে চীন। তারা পুনর্ব্যক্ত করেছে যে অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে বেইজিং।

জাতিসংঘ: নতুন সরকারের কাছ থেকে কী ধরনের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ আসে তা দেখবে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, ‘আমরা অবশ্যই যে কোনো উপায়ে বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণকে তাদের প্রয়োজনীয় মনে হয় এমন যে কোনও উপায়ে সমর্থন করতে প্রস্তুত।’