নূর: শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠান, একটা দলের জন্য সম্পর্ক নষ্ট করবেন না

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর দাবি করেছেন যে ভারতকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে হবে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে হবে।

বক্তব্য দিচ্ছেন নুরুল হক নুর

শুক্রবার পুরনো পল্টনে এক সম্প্রীতি সমাবেশে নূর বলেন, ভারত ২০২৪, ২০১৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনগুলোতে শেখ হাসিনাকে একচ্ছত্র সমর্থন দিয়েছিল। যখন সারা বিশ্ব বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে সওয়াল করেছিল, ভারত তখনও হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে মরিয়া ছিল।

‘আমরা ভারতকে বলছি, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠানো হোক। আর আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখুন। একটা দলের জন্য সম্পর্ক নষ্ট করবেন না,’ বলেন নূর।

তিনি আরও বলেন যে গণ অধিকার পরিষদ ভারত হাইকমিশনারকে ঘেরাও করবে যদি হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো না হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছেও নূর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে তারা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী করণীয়গুলো ঠিক করবেন। তিনি আশা করছেন যে এই সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে এবং বিদেশে পাচারকৃত অর্থের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে নূর মন্তব্য করেন, ছাত্র-জনতা যখন বিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে আরেকবার স্বাধীন করেছে তখন একদল মানুষ নৈরাজ্য কায়েম করছে। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় দখলদারি চালাচ্ছে, লুটপাট করছে। এসবের মাধ্যমে তারা ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ব্যর্থ করে দিতে চায়।

তিনি বলেন, গণ অধিকার পরিষদ, বিএনপি ও জামায়াত এসব নৈরাজ্য করছে না। এগুলো কারা করছে তা চিহ্নিত করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উচিত তাদের বিচারের মুখোমুখি করা। এ সময় তিনি নৈরাজ্যরোধে পাড়ায় পাড়ায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, বিপ্লবের পরে আবার প্রতিবিপ্লব ঘটার আশঙ্কা থাকে। এরইমধ্যে সারাদেশে বিশৃঙ্খলা, ডাকাতি, রাহাজানি, হানাহানি শুরু হয়েছে। এগুলো কিন্তু কোনোভাবেই ভালো লক্ষণ নয়। ছাত্র-জনতার অর্জনকে বিতর্কিত করতেই এ চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তাই আসুন, সবাই মিলে ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠা করি। জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে এ দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভূমিকা রাখি।

এ বাংলাদেশে আর কখনোই কোনো শেখ হাসিনা তৈরি হতে দেওয়া যাবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সুকুমার বড়ুয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অধ্যাপক লতিফ মাসুম, দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আব্দুজ জাহের, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শওকত প্রমুখ।