ড. ইউনূস: বিকল্প নেই, অবশ্যই সফল হতে হবে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ বলেছেন, শিক্ষার্থীরা চায় দেশে অর্থবহ ও গভীর সংস্কার আনা হোক যা বাংলাদেশকে ‘একটি প্রকৃত ও সমৃদ্ধ গণতন্ত্রে’ রূপান্তরিত করবে।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস

একটি হোটেলে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমাকে অবশ্যই সফল হতে হবে। আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘কাজটি বিশাল, কিন্তু সকল মানুষ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় এটি করা সম্ভব।’

শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকার জন্য শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকার দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। বিচার বিভাগ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে নির্মম দমন-পীড়নের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। নির্বাচন কারচুপি করা হয়েছে। তরুণ প্রজন্ম ভোটাধিকার প্রয়োগ না করেই বড় হয়েছে। পুরোপুরি রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক লুট করা হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার লুণ্ঠন করা হয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা পুনর্ব্যক্ত করেন যে, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করার জন্য তাদের নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করার সঙ্গে সঙ্গেই তারা অবাধ, সুষ্ঠু এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন।

‘আমরা জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাবো।’

তিনি বলেন, একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর একটি স্বপ্ন চাপিয়ে দিয়েছে - এমন একটি দেশ যেখানে মানুষ তাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা জাতিগত পরিচয় নির্বিশেষে তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে সক্ষম হবে এবং মতপ্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে, যেখানে সরকার গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং বাক স্বাধীনতা সমুন্নত রাখবে।

তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শীর্ষ অগ্রাধিকার।

‘জনগণ এবং দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর অবিচল সমর্থনে আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই স্বাভাবিক অবস্থার কাছাকাছি চলে আসব। পুলিশ বাহিনী তাদের অভিযান পুনরায় শুরু করেছে। পরিস্থিতি যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন সশস্ত্র বাহিনী বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করবে।’

বাংলাদেশ একটি নতুন সূচনার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন,‘"আমাদের সাহসী শিক্ষার্থী এবং জনগণ আমাদের জাতির স্থায়ী রূপান্তরের যোগ্য। এটি একটি কঠিন যাত্রা এবং পথে আমাদের আপনার সাহায্যের প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, ততই ভালো। আমাদের একটি দারিদ্র্যমুক্ত এবং সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করতে হবে।’