ড. ইউনূস: নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ হতে পারে চার বছর

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলমান জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নতুন সংবিধানের অধীনে সরকারের মেয়াদ হতে পারে চার বছর। কারণ বর্তমান সময়ে জনগণ দ্রুত উন্নতি ও অগ্রগতি চায়। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কাজ করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আল জাজিরাকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন ড. ইউনূস

পরবর্তী নির্বাচনের সময় সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হবে। যদি তারা মনে করেন সংস্কারের প্রয়োজন নেই, তাহলে তাড়াতাড়ি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে, যদি তারা মনে করেন সংস্কার অপরিহার্য, তাহলে প্রথমে সংস্কার কার্যক্রম শেষ করা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সম্পর্কে ড. ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, এই সরকার একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, স্থায়ী নয়। সাধারণত বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ ৪-৫ বছর। নতুন সংবিধানে এই মেয়াদ ৪ বছর হতে পারে কারণ বর্তমানে দেশের মানুষ দ্রুত অগ্রগতি কামনা করে।

অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি চার বছর পদে থাকবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, তার উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করে নির্বাচন দেওয়া।

ভারতে পলাতক শেখ হাসিনার বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, তিনি ভারতে থেকে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন এবং বিক্ষোভের ডাক দিচ্ছেন। ভারত সরকারকে এ বিষয়ে বাংলাদেশের আপত্তির কথা জানানো হয়েছে। শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ বলে আওয়ামী লীগের উল্লেখ করার বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, তিনি নিজেকে যা ই বলুন না কেন, বাস্তবতা হলো ভারত সরকারও তাকে ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী’ বলে সম্বোধন করেছে।

তিনি আরও বলেন যে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করা হবে।

নিজের রাজনীতিতে প্রবেশের সম্ভাবনা নাকচ করে ড. ইউনূস বলেন, জীবনের এই শেষ প্রান্তে এসে তার রাজনীতিতে আসার কোনো ইচ্ছা নেই। তিনি একজন রাজনীতিক নন।

সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, তারা সংখ্যালঘু বলে নির্যাতিত হচ্ছে না, বরং আওয়ামী লীগের কারণে জনগণের ক্ষোভের শিকার হচ্ছেন। এ ধরনের ব্যাপক সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রোপাগান্ডা।

জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, বিচ্ছিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে না। বৃহত্তর এই সমস্যা সমাধানে মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি।