হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় তুরস্কে স্থানান্তরের খবর অস্বীকার

ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় কাতার থেকে তুরস্কে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করা হয়েছে। তবে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই খবর অস্বীকার করেছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরকে মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছে।

তুরস্কের পতাকা

সম্প্রতি কাতার ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাতে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে তার ভূমিকা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। কাতারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েল এবং হামাসের প্রতিনিধিরা যতদিন পর্যন্ত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করবে না, ততদিন তাদের দেশ গাজা যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করবে না।  

এরপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক বিবৃতিতে হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় কাতার থেকে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি হামাস নেতাদেরও দেশটি থেকে বহিষ্কার করার জন্য বলেছে। 

তবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র এই দেশটি  হামাস সদস্যদের বহিষ্কারের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এমনকি হামাসের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তাও বলেছেন, কাতারি কর্তৃপক্ষ তাদেরকে এ ধরনের কোনো নির্দেশ দেয়নি। 

কাতারের আমির ছাড়াও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে হামাস নেতাদের। ফিলিস্তিনি মুক্তি ও প্রতিরোধ আন্দোলনের একটি গোষ্ঠী হিসেবে হামাসকে অনেক আগেই স্বীকৃতি দিয়েছে তুরস্ক।  অপরদিকে ইসরায়েলকে সমর্থনকারী সব দেশই হামাসকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। 

এদিকে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র সোমবার বলেছে, হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অতীতে দেশটিতে উল্লেখযোগ্য সফর করেছেন। তবে হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় তুরস্কে স্থানান্তরিত করা হয়নি। অবশ্য সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার তুরস্ক সফরের খবরও পাওয়া যায়নি।

গত বছর হামাস এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মধ্যে পুনর্মিলনের চেষ্টা করেছিলেন এরদোয়ান। তিনি হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে তুরস্কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এরপর চলতি বছরের জুলাইয়ে ইরানে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হানিয়া নিহত হন। তার হত্যাকাণ্ডের পর আগস্টে হানিয়ার ছেলেদের তুরস্কে আমন্ত্রণ জানান এরদোয়ান।   

ইসরায়েল হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে চায়। হানিয়া শহীদ হওয়ার পর ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী এই গোষ্ঠীর রাজনৈতিক শাখার প্রধান হন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। ১৬ অক্টোবর মহান এই যোদ্ধাকেও হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর ইসরায়েল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে যাবে। ফলে কয়েক মাস ধরে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।  

উল্লেখ্য, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন সংঘর্ষের একটি স্থায়ী সমাধানের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে তুরস্ক। দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে। 

সূত্র: ডেইলি সাবাহ