ইমরানের কঠোর নির্দেশ: ২৪ নভেম্বর বিক্ষোভে অংশ না নিলে দল ছাড়ুন

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান দলীয় নেতাকর্মীদের আসন্ন ২৪ নভেম্বরের বিক্ষোভে অংশগ্রহণের জন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, যারা এই বিক্ষোভে অংশ নিতে ব্যর্থ হবেন, তাদেরকে দল থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন।

ইমরান খান

এক বিবৃতিতে ইমরান খান বলেন, ‘এই বিক্ষোভ আমাদের দলের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের লড়াইয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যারা এই লড়াইয়ে অংশ নেবেন না, তাদের পিটিআই-এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত নয়।’

গত ১৩ নভেম্বর ইমরান খান দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন। ‘চুরি করা ম্যান্ডেট’, বেআইনি গ্রেপ্তার এবং সংবিধানের ২৬তম সংশোধনীর প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ২৪ নভেম্বরের বিক্ষোভ সেই কর্মসূচিরই ধারাবাহিকতা। ইমরানের দাবি, ২৬তম সংশোধনী দেশে স্বৈরশাসনকে আরও শক্তিশালী করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) এক পোস্টে ইমরান খান ২৪ নভেম্বরের বিক্ষোভকে ‘পাকিস্তানের প্রকৃত স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের সুবর্ণ সুযোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘পরাধীন জাতি ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যায়।’

এই বিক্ষোভ শুধু পিটিআই-এর জন্য নয়, বরং সমগ্র জাতির জন্য বলেও মন্তব্য করেন ইমরান। তিনি সকল পাকিস্তানিকে এই বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

ইমরান অভিযোগ করেন, পাকিস্তানে আইনের শাসন, অবাধ নির্বাচন এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মতো গণতন্ত্রের মৌলিক স্তম্ভগুলোকে ‘স্থগিত’ করে রাখা হয়েছে। তিনি মিডিয়ার ওপর চাপ এবং ইন্টারনেটে ব্যাঘাতের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার দাবি, সরকারের এইসব কর্মকাণ্ড দেশকে ৫৫০ বিলিয়ন রুপির আর্থিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন, পিটিআই কর্মীদের ওপর বলপ্রয়োগ, গুম এবং সহিংসতা জাতীয় নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে।

দলের কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক শেখ ওয়াকাস আকরাম জানিয়েছেন, ২৪ নভেম্বরের বিক্ষোভে কোনো প্রকার বাধা তার দল মেনে নেবে না এবং এক্ষেত্রে সরকার বা অন্য কোনো পক্ষের সঙ্গে আপসের কোনো সুযোগ নেই।

ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবি দলীয় নেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ ভবিষ্যৎ নির্বাচনে পিটিআই-এর মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পিটিআই-এর দাবি, ক্ষমতাসীন দল যতক্ষণ না ‘চুরি করা ম্যান্ডেট’ ফেরত দেয়, সংবিধান পুনর্বহাল করে এবং ইমরান খানকে মুক্তি দেয়, ততক্ষণ তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২৪ নভেম্বরের এই কর্মসূচি পাকিস্তানের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও গরম করে তুলবে।