১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া

দীর্ঘ ১২ বছর পর বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনায় যোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত এই সংবর্ধনায় তিনি উপস্থিত ছিলেন। ২০১৮ সালে কারাবরণের পর গত ছয় বছরের মধ্যে এটিই তার প্রথম কোনো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ। শেষবার তিনি ২০১২ সালে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন।

ছবি - সংগৃহীত

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গুলশানের বাসভবন থেকে বের হয়ে সেনাকুঞ্জে যান। তার সঙ্গে ছিলেন প্রয়াত পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী।

মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ থেকে খালেদা জিয়াকে সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেনাবাহিনী প্রধানের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএসএম কামরুল আহসান এবং চিফ অফ জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম তাকে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির আরও ২৬ জন নেতাকেও সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সংবর্ধনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনী প্রতিষ্ঠার স্মরণে বৃহস্পতিবার নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজা প্রাপ্তির পর খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবরণ করতে হয়।

২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা ১০ বছরে বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে তাকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ৭৭৬ দিনের জন্য তার সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়। শর্ত ছিল, তাকে গুলশানের বাসভবনে থাকতে হবে এবং দেশ ছাড়তে পারবেন না।

উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বিএনপি তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি তার সাজা মাফ করে দেন।