আইসিবিকে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সক্ষমতা বাড়াতে এবং তারল্য সংকট কাটাতে বিনিয়োগ করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ পাচ্ছে। বুধবার রাষ্ট্রায়ত্ত এই বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক

বর্তমানে দেশে আমানত ও ঋণের সুদের হারের চেয়ে কম, বার্ষিক ১০ শতাংশ সুদে এই ঋণ দেওয়া হলেও, আইসিবি আরও কম সুদের হার প্রত্যাশা করেছিল। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি নীতিনির্ধারণী সুদের হার ১০ শতাংশে উন্নীত করেছে।

ঋণটি সরকারের গ্যারান্টিতে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আইসিবি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে সরকারই দায়ভার বহন করবে। গত ৭ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংককে ঋণের জামিনদার হিসেবে সরকারের সম্মতির কথা জানিয়েছিল।

১০ শতাংশ সুদের হার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ। তিনি বলেন, `নীতি সুদের হার অনুযায়ী সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে, কিন্তু এটি আরও বাড়লে আমাদের সমস্যায় পড়তে হবে। সুদের হার কমানো এবং আরও সহজ শর্তের জন্য আমরা শীঘ্রই অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করব।'

বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত বিশেষ তহবিল, যেমন পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প, বর্তমানে ৪ শতাংশ ব্যাংক রেটকে মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নীতি সুদের হার, রেপো, স্পেশাল রেপো এবং রিভার্স রেপো হার বৃদ্ধি পেলেও ব্যাংক রেট অপরিবর্তিত রয়েছে।

ঋণ বিতরণের তারিখ থেকে ১৮ মাসের জন্য সরকারের ঋণ গ্যারান্টি নির্ধারিত হয়েছে। গ্যারান্টিপত্র অনুযায়ী, আইসিবি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের লাভ থেকে কোনো অপরিশোধিত বা বকেয়া ঋণ বা সুদ পরিশোধ করবে না।

আইসিবি প্রধান আবু আহমেদ জানান, প্রতিষ্ঠানটি কিছু উচ্চ-সুদে আমানত রাখে, যার জন্য বার্ষিক প্রায় ৯০০ কোটি টাকা সুদ পরিশোধ করতে হয়। প্রতিষ্ঠানটি এই উচ্চ-সুদের আমানতের একটি অংশ বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে এবং ধীরে ধীরে বাকি তহবিল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন ও সূচক বৃদ্ধি পেলেও এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা মাত্র চার কার্যদিবস স্থায়ী হয়। ১৪ আগস্ট থেকে বাজারে পতন শুরু হয় এবং বিনিয়োগকারীরা একদিনেই ১০০ পয়েন্টের পতন দেখতে পান।

আইসিবি তাদের তারল্য সংকট এবং আরও বিনিয়োগ করতে না পারার কথা উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ঋণের জন্য আবেদন করে।

বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত এক সভায় ঋণ আবেদনটি পর্যালোচনা করা হয়। সভায় গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। সভার পর, অন্তর্বর্তী সরকার ঋণ অনুমোদন করতে সম্মত হয়।

বিডিনিউজ থেকে অনূদিত