মিতু হত্যা: ভোলার দাবি, ভয় দেখিয়ে বাবুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বীকারোক্তি নিয়েছিল পিবিআই

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় অভিযুক্ত এহতেশামুল হক ভোলা দাবি করেছেন, পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করেছে। রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এই অভিযোগ করেন। ভোলার দাবি, তাকে ‘বাবুল আক্তারই তার স্ত্রী মিতুকে খুন করেছে’—এই বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

ভোলা ও বাবুল আক্তার

পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ভোলা সরবরাহ করেছিলেন। কিন্তু ভোলা পাল্টা অভিযোগ করেন, পিবিআইয়ের সাবেক প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বাবুল আক্তার।

তার মতে, বাবুলের সঙ্গে বনজের প্রশাসনিক দ্বন্দ্ব ছিল। ২০১৬ সালে রিয়াজউদ্দিন বাজারের একটি গুদাম থেকে স্বর্ণ উদ্ধার অভিযানকে কেন্দ্র করে এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। বনজ কুমার অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও বাবুল তাতে রাজি হননি বলে ভোলা দাবি করেন। এই দ্বন্দ্বের জের ধরেই বাবুলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ভোলা আরও অভিযোগ করেন, তার কাছ থেকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান ২০ লাখ টাকাসহ পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে প্রায় এক কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। তিনি দাবি করেন মামলাটির পুনঃতদন্ত হওয়া উচিত।

এদিকে, হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেও রোববার কারাগার থেকে মুক্তি পাননি বাবুল আক্তার।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মাহমুদা খানম মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন তার স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ তদন্তের পর ২০২১ সালের ১২ মে পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। একই দিনে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে নতুন একটি মামলা করেন। পিবিআই ওই দিনই বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। তিনি সেই থেকে কারাগারে আছেন। বর্তমানে মামলাটি চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এ পর্যন্ত ৯৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।