পরমাণু ইস্যুতে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী বৈঠক রোমে

ইরান নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরবর্তী পরমাণু আলোচনা রোমে অনুষ্ঠিত হবে। আগামী শনিবার ওমানের মধ্যস্থতাতেই সেখানে ওই বৈঠক হবে। ওমানের মাস্কাটে প্রথম দফা আলোচনার পর দ্বিতীয় দফা আলোচনা কোথায় হবে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছিল বিভ্রান্তি। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।

পরমাণু ইস্যুতে নতুন করে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির কথা বলে আসছিলেন। একইসঙ্গে তিনি হুমকিও দিচ্ছিলেন, চুক্তিতে রাজি না হলে ইরানে সামরিক আগ্রাসন চালানো হবে।

একপর্যায়ে হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে পরমাণু ইস্যুতে আলোচনায় বসেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের কর্মকর্তারা। দুই দেশের মধ্যেই সরাসরিই হয় এ আলোচনা। বৈঠক শেষে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে আলোচনা সফল বলে জানানো হয়।

এরপর দ্বিতীয় দফা আলোচনা নিয়ে দেখা দেয় বিভ্রান্তি। সোমবার কিছু মার্কিন কর্মকর্তা প্রথমে রোমকে আলোচনার আয়োজনকারী হিসেবে চিহ্নিত করেন। তবে পরদিন ইরান জোর দিয়ে জানায়, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ওমানই থাকবে, তা না হলে তাদের প্রতিনিধি দল ওমানে ফিরে আসবে।

দুইপক্ষের জেদাজেদির পর আলোচনা কোথায় অনুষ্ঠিত হবে, মার্কিন কর্মকর্তারা সে নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও বুধবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির ঘোষণায় বলা হয়েছে, শনিবার রোমেই আলোচনা হবে। তবে ওমান আবারও আলোচনায় মধ্যস্থতা করবে।

ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত সপ্তাহান্তে ওমানের রাজধানী মাসকাটে আলোচনার সময় উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন।

যদিও মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ব্যাপারে নেদারল্যান্ডস সফরে থাকা ওমানের সুলতান হাইথাম বিন তারিককে ফোন করেছিলেন।

পারমাণবিক উন্নয়ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ট্রাম্প বারবার হুমকি দিয়েছেন, যদি কোনও চুক্তি না হয় তবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, অস্ত্র-গ্রেড স্তরের কাছাকাছি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে ইরান।

এর আগে ২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ইরানের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ছয়জাতি আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ওই চুক্তি বাতিল করেন।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে আরও জানানো হয়, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান আনুষ্ঠানিকভাবে তার একজন ভাইস প্রেসিডেন্টের পদত্যাগপত্র অনুমোদন করেছেন, যিনি বিশ্বশক্তির সঙ্গে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিতে তেহরানের প্রধান আলোচক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসিও বুধবার তেহরানে যান। কোনও প্রস্তাবিত চুক্তির অধীনে তার আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিদর্শকরা কী কী সুযোগ পেতে পারেন, তা নিয়ে প্রেসিডেন্ট মাসুদের সঙ্গে আলোচনা করেন গ্রোসিও।