পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনে ট্রাম্পের পরিকল্পনা, ইরানের তীব্র ক্ষোভ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘পারস্য উপসাগর’-এর পরিবর্তে ‘আরব উপসাগর’ নামটি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন বলে মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে। ইরানের সঙ্গে চলমান পরমাণু আলোচনার মধ্যেই এমন সিদ্ধান্ত তেহরানের তীব্র ক্ষোভের কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এপি ও মিডলইস্টমনিটর এই খবর জানিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পারস্য উপসাগর

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরান ও আরব উপদ্বীপের মধ্যবর্তী এই গুরুত্বপূর্ণ জলরাশিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আরব উপসাগর’ বা ‘গালফ অব অ্যারাবিয়া’ নামে অভিহিত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। বর্তমানে এটি আন্তর্জাতিকভাবে ‘পারস্য উপসাগর’ নামেই সর্বাধিক পরিচিত। ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরব গিয়ে এই ঘোষণা দিতে পারেন বলে জানা গেছে। এই সফরে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারসহ অন্যান্য উপসাগরীয় দেশও ভ্রমণ করবেন।

এই খবর প্রকাশের পরপরই ইরান তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, তিনি আশা করছেন এটি ভুল তথ্য। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘পারস্য উপসাগর নামটি কোনো দেশের একক মালিকানা বোঝায় না, বরং এটি মানবতার সম্মিলিত ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং ভৌগোলিকভাবে ইতিহাসে গভীরভাবে প্রোথিত।’

আরাঘচি আরও বলেন, ‘ইরান কখনোই ওমান সাগর, ভারত মহাসাগর, আরব সাগর বা লোহিত সাগরের নাম ব্যবহারে আপত্তি করেনি। কিন্তু পারস্য উপসাগরের ঐতিহাসিক নাম পরিবর্তনের এই রাজনৈতিক প্রচেষ্টা ইরান ও তার জনগণের প্রতি শত্রুতারই সামিল। আমরা এর কঠোর নিন্দা জানাই। এমন পক্ষপাতদুষ্ট পদক্ষেপ ইরান ও তার জনগণের জন্য চরম অপমানজনক।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এই ধরনের একপাক্ষিক ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের কোনো ভৌগোলিক বা আইনি বৈধতা নেই। এটি কেবল ইরানের অভ্যন্তরে ও বাইরে সব স্তরের মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেবে।’

ইতিহাসবিদরা জানাচ্ছেন, ‘পারস্য উপসাগর’ নামটি প্রায় ২৫০০ বছরের পুরনো এবং এটি অসংখ্য আন্তর্জাতিক মানচিত্র ও জাতিসংঘের দলিলে স্বীকৃত। এই নাম পরিবর্তনের প্রচেষ্টা কেবল ঐতিহাসিক সত্যকে অস্বীকার করাই নয়, বরং এটি এই অঞ্চলে বিভাজনকেও উসকে দিতে পারে বলে তারা মনে করছেন।