চিকিৎসকদের জন্য সুখবর: ৭ হাজার পদোন্নতি, বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাবনাও চূড়ান্ত

দেশের চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন এবং চিকিৎসকদের পেশাগত মর্যাদা ও কর্মপরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে ৭ হাজার চিকিৎসককে পদোন্নতি দেওয়ার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে, চিকিৎসক ও সার্জনদের বেতন কাঠামো পর্যালোচনা ও বেতন বৃদ্ধির একটি প্রস্তাবনাও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের লোগো

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির (ওএসবি) ৫২তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেন।

উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘সরকার চিকিৎসকদের পেশাদারিত্ব এবং আত্মত্যাগকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করে। দীর্ঘদিন ধরে বহু চিকিৎসক তাদের ন্যায্য পদোন্নতি এবং বেতন কাঠামো পর্যালোচনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তাদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনা করেই এই বৃহৎ পরিসরে পদোন্নতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, চিকিৎসকরা যেন নতুন উদ্যমে ও উৎসাহের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করেন। এই পদক্ষেপ তাদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলবে এবং সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবার মান বাড়াতে আরও উৎসাহিত করবে।’

গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু চিকিৎসক সময়মতো কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। রোগীদের নির্বিঘ্ন সেবা নিশ্চিত করতে হলে চিকিৎসকদের পেশাগত আচরণে শৃঙ্খলা আনা জরুরি। সংস্কার প্রথমে নিজের মধ্য থেকে শুরু করতে হবে, তবেই সামগ্রিক স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে চিকিৎসক সংকট রয়েছে, সেখানে আমরা প্রয়োজনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেবো এবং বেতন বৃদ্ধি করেও অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠাতে প্রস্তুত। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো দেশের প্রতিটি নাগরিকের দোরগোড়ায় মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া।"ৎ’

অনুষ্ঠানে চক্ষু চিকিৎসকদের দক্ষতার প্রশংসা করে উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্প্রতি জুলাই মাসে আহত চক্ষু রোগীদের চিকিৎসায় আমাদের দেশের চিকিৎসকদের পারদর্শিতা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত হয়েছে, যা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। বিদেশি চিকিৎসকরা এসে আমাদের চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রকে 'পারফেক্ট' বলেছেন।’

বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল হোসেন।

তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে দেশ ও বিদেশের স্বনামধন্য চক্ষু বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করছেন। আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেছেন, এই সম্মেলন দেশের চক্ষু চিকিৎসা খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।