সৌদি যুবরাজের অনুরোধে সাড়া, সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেবেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুরোধে সিরিয়ার ওপর আরোপিত সব মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেবেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এই পদক্ষেপ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য একটি বড় সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) সৌদি আরব সফরের সময় রিয়াদে একটি বিনিয়োগ ফোরামে বক্তব্য দেওয়ার সময় ট্রাম্প এই আকস্মিক ঘোষণা দেন। খবর আল-আরাবিয়ার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

ফোরামে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেবো, যেন তারা আবার নিজেদের গৌরব ফিরে পেতে পারে। এখন তাদের উজ্জ্বল হওয়ার সময়। সিরিয়ার জন্য শুভকামনা। আমরা সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছি, তারা যেন আমাদের কিছু অসাধারণ দেখাতে পারে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘নিষেধাজ্ঞাগুলো তাদের সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল, কিন্তু এখন সময় হয়েছে তাদের এগিয়ে যাওয়ার।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো চলতি সপ্তাহের শেষে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল-শায়বানির সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও জানান ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, এই বৈঠকে দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক, বিনিয়োগ এবং পুনর্গঠন সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে।

এদিকে, ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে সিরিয়ার জন্য ‘একটি ঐতিহাসিক মোড়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সানাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটি সিরিয়ার জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। দীর্ঘদিনের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পর এটি সিরিয়ান জনগণের জন্য স্থিতিশীলতা, আত্মনির্ভরতা ও প্রকৃত পুনর্গঠনের পথে এক ঐতিহাসিক অগ্রগতি।’

হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বুধবার (১৪ মে) রিয়াদে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্সির দুটি সূত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনামলে দেশটির ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, যা তার অপসারণের পরও বহাল ছিল। আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর নতুন নেতৃত্ব এলেও নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়। অবশেষে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে সেই নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছিল এবং সম্প্রতি দেশটি সিরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করে।