ন্যাটো মহাসচিব: শান্তি আলোচনায় প্রস্তুত ইউক্রেন, এখন মস্কোর পালা

ইউক্রেন শান্তি আলোচনার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত, এই আহ্বানে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার দায়িত্ব এখন রাশিয়ার। বৃহস্পতিবার তুরস্কের আনতালিয়া শহরে ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে।

মার্ক রুটে

রুটে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউক্রেন যে আলোচনার জন্য প্রস্তুত, তা অত্যন্ত স্পষ্ট। এখন বল রাশিয়ার কোর্টে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাশিয়া আলোচনায় কেবল নিম্ন-পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দেওয়া সুযোগ গ্রহণ করছে না। জেলেনস্কির উদ্ধৃতি দিয়ে রুটে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি হলেই আমি পুতিনের সঙ্গে বসতে রাজি, আমরা শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছুক।’

ন্যাটো প্রধান জোর দিয়ে বলেন, ইউক্রেন বিষয়ে যেকোনো ভবিষ্যৎ চুক্তি অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য ও টেকসই হতে হবে। অতীতের ব্যর্থ চুক্তি থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চুক্তিটি দীর্ঘস্থায়ী হতে হবে। ২০১৪-১৫ সালের মিনস্ক চুক্তির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না, যা স্বাক্ষরের কালি শুকানোর আগেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল।’

তুরস্কের প্রশংসায় ন্যাটো প্রধান

আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে রুটে ইউক্রেনকে সমর্থনকারী বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করেন, যার মধ্যে তুরস্কের নেতৃত্বাধীন ‘ঐকমত্যের জোট’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। শান্তি আলোচনা ও বর্তমান ন্যাটো বৈঠকের আয়োজক হিসেবে তুরস্কের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘স্পষ্টতই, তুরস্ক এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমরা প্রতিদিন তা দেখতে পাচ্ছি।’ এছাড়াও, তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের অগ্রগতিরও প্রশংসা করেন তিনি।

মার্কিন সম্পৃক্ততাকে স্বাগত

ইউক্রেন শান্তি প্রচেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততাকেও স্বাগত জানিয়ে রুটে বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধকে একটি ন্যায্য ও স্থায়ী সমাপ্তির দিকে নিয়ে আসার জন্য প্রেসিডেন্ট (ডোনাল্ড) ট্রাম্পের জরুরি প্রচেষ্টার প্রতি আমরা আমাদের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি। এটি এমন একটি অগ্রাধিকার যা আমরা সকলেই সমর্থন করি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে (এ বিষয়ে) অত্যন্ত মনোযোগী, সেজন্য আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।’

'জোট সঠিক পথে, তবে ব্যয় বাড়াতে হবে'

মার্ক রুটে জোর দিয়ে বলেন যে সামরিক জোট ন্যাটো সঠিক পথেই রয়েছে। তবে তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে প্রতিটি সদস্য দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২% প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করা ‘মোটেই যথেষ্ট নয়।’

তিনি জানান, বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য ছিল প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি করা, যাতে জোট যেকোনো হুমকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে পারে। রুটে আত্মবিশ্বাসী যে জুনের শেষে দ্য হেগের আসন্ন সম্মেলনে ন্যাটো মিত্ররা একটি উচ্চাভিলাষী নতুন প্রতিরক্ষা ব্যয় ও বিনিয়োগের লক্ষ্যে সম্মত হবে।